যুক্তরাষ্ট্রের অঙ্গরাজ্য টেক্সাস উপকূলে আঘাত হেনেছে শক্তিশালী সাইক্লোন হার্ভে। স্থানীয় সময় শুক্রবার রাতে হার্ভে আঘাত হানে। এতে সোয়া দুই লাখ মানুষ বিদ্যুত্হীন হয়ে পড়েছেন। হাজার হাজার মানুষ বাড়ি-ঘর ছেড়ে নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নিয়েছেন। প্রচুর বৃষ্টিপাতের কারণে বন্যার আশংকা করা হচ্ছে।
ঘূর্ণিঝড়টি উপকূলের আরানসাস ও ও’কনর বন্দরের মধ্যবর্তী স্থান দিয়ে মেক্সিকো উপসাগর থেকে স্থলে উঠে আসে। চার মাত্রার এ ঘূর্ণিঝড় যুক্তরাষ্ট্রের মূল ভূখণ্ডে ১৩ বছরের মধ্যে আঘাত হানা সবচেয়ে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়। খবর বিবিসি, সিএনএন ও রয়টার্স।
শুক্রবার রাত ১১ টার দিকে আঘাত হানে হার্ভে। ঘন্টায় ১৩০ মাইল বেগে বয়ে যায়। এতে অনেক গাছ উপড়ে পড়ে। বিদ্যুত্ ব্যবস্থা বিপর্যস্ত। তবে গতকাল শনিবার দুপুরের দিকে হার্ভে দুর্বল হয়ে পড়ে। ওই সময় হার্ভের গতিবেগ ছিল ঘন্টায় ৮০ মাইল। পরে এটি উত্তর-পূর্ব দিকে ৬ মাইল বেগে বয়ে যায়। হারিকেন সেন্টার আশংকা করছে, বুধবার পর্যন্ত ৪০ ইঞ্চি বৃষ্টিপাত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
আবহাওয়াবিদরা জানিয়েছেন, হার্ভের কারণে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হতে পারে। স্কুল, হোটেল এবং অন্যান্য ভবনে হাজার হাজার মানুষ আশ্রয় নিয়েছে। ২০০৫ সালে হারিকেন ক্যাটরিনার আঘাতে এই রাজ্যে প্রায় ১ হাজার ৮শ’ জন নিহত হন। গত ৫০ বছরের বেশি সময়ের মধ্যে টেক্সাসবাসী এক শক্তিশালী ঝড় দেখেনি। ঝড়ো বাতাসের সঙ্গে ভারি বৃষ্টিপাতে টেক্সাসের জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা রকপোর্ট ও করপাস ক্রিস্টিতে ভূমিধসের ঘটনা ঘটেছে। ধ্বংসস্তুপের নিচে লোকজনের আটকে পড়ার আশংকাও করা হচ্ছে।
গতকাল সকাল থেকে ক্ষয়ক্ষতির হিসাব শুরু করেছে জরুরি দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থা। সংস্থার মহাপরিচালক ব্রক লং বলেন, হার্ভের আঘাতে প্রচুর মানুষের মৃত্যু এবং স্মরণকালের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ক্ষয়ক্ষতি হতে পারতো। কিন্তু পূর্ব প্রস্তুতির কারণে সেটা থেকে রক্ষা পাওয়া গেছে। টেক্সাসকে দুর্যোগ কবলিত এলাকা বলে ঘোষণা দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। আগামী সপ্তাহে তিনি রাজ্যটি সফরে যেতে পারেন। এর ফলে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোতে কেন্দ্রীয়ভাবে ত্রাণ পাঠানো হবে।
রাজ্যের গভর্নর গ্রেগ অ্যাবট সতর্ক করে দিয়ে বলেন, অনেক এলাকায় ব্যাপক বন্যা হতে পারে। রকপোর্ট, আরানসাস পাস, বন্দর আরানসাসে বেশি ক্ষতি হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। রকপোর্টের অগ্নিনির্বাপন কর্মীরা জানিয়েছেন, সেখানে বাতাসের গতিবেগ ছিল ঘন্টায় ১৪০ কিলোমিটার। কয়েক ঘন্টা ধরে বাতাসের এই গতিবেগ ছিল।
No comments:
Post a Comment