আবারো রোহিঙ্গা মুসলিম অধ্যুষিত রাখাইন প্রদেশে নতুন করে অভিযান শুরু করেছে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। আর এতেও ক্ষান্ত হচ্ছেনা তারা, নিজেদের গণমাধ্যমে রোহিঙ্গাদের ‘বাঙালি সন্ত্রাসী’ হিসেবে চিহ্নিত করে বিভিন্ন নিবন্ধও প্রকাশ করছে।
বিবিসি বলছে, ‘বাঙালি সন্ত্রাসী’দের ব্যাপারে সেদেশের জনগণ এবং বিদেশি নাগরিকদের সাবধান থাকতে বলেছে মিয়ানমার সরকার। মিয়ানমার থেকে প্রকাশিত দৈনিক মিয়ানমার টাইমসের সোমবারের পত্রিকার প্রধান শিরোনাম এটি। একইসঙ্গে সতর্ক থাকতে আহ্বান জানানো হয়েছে আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভাশন আর্মি বা আরসার ব্যাপারেও।
মিয়ানমারের সরকারের ভাষ্য অনুযায়ী, শনিবারে রাখাইনের টং বাজার গ্রামটি ‘বাঙালি সন্ত্রাসী’রা অবরোধ করেছিল। অভিযোগ করা হয়েছে যে, এর সঙ্গে আরো জড়িত আছে বেসরকারি আন্তর্জাতিক সংস্থার কিছু কর্মীও। রিপোর্টে মিয়ানমারের নেত্রী অং সান সুচি’র অফিস স্টেট কাউন্সিলর অফিস ইনফরমেশন কমিটির বরাত দিয়ে আরো বলা হয়েছে, সন্ত্রাসী সংগঠনগুলোর বিদেশী সমর্থকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সরকার ইন্টারপোলের সাহায্য চেয়েছে।
মিয়ানমারের রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন দৈনিক গ্লোবাল নিউ লাইট অব মিয়ানমারের এক রিপোর্টে বলা হচ্ছে, আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর কর্মীদের একটি অংশ আরসা’কে সহায়তা করছে বলে এক বিবৃতিতে জানিয়েছে অং সান সু চি’র অফিস। ঐ প্রতিবেদনে ‘আরসার সন্ত্রাসী’দের সমর্থনে নেয়া যেকোনো কাজের জন্য দেশটির সন্ত্রাসবিরোধী আইনে বিচার করা হবে বলে হুশিয়ারি দেয়া হয়েছে। এর আগে ঐ এলাকায় নিরাপত্তা ব্যাপকভাবে বাড়ানো হয়েছে বলেও উল্লেখ করা হয়। এদিকে, দ্য ইরাওয়াদি দৈনিকে স্টেট কাউন্সিলরের অফিসের বরাত দিয়ে শুক্রবারের ঘটনাকে ‘সন্ত্রাসী হামলা’ হিসেবে আখ্যা দিয়ে বলা হয়েছে, এর পেছনে উত্তর রাখাইনের সন্ত্রাসী সংগঠন আরসা দায়ী।
তবে মিয়ানমার থেকে প্রকাশিত ইংরেজি দৈনিক ফ্রন্টিয়ার মায়ানমারে আজকের প্রধান সংবাদ বলা হয়েছে, উত্তর রাখাইন প্রদেশের নিরাপত্তা পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। রবিবার রাখাইন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী সেখানে পরিদর্শনে যান, আর তা কেন্দ্র করে নিরাপত্তা বাহিনীর চালানো অভিযানের পর বলা হয় পরিস্থিতি এখন স্থিতিশীল রয়েছে। মিয়ানমার থেকে প্রকাশিত দৈনিক ডেমোক্রেটিক ভয়েস অব বার্মায় প্রকাশিত এক রিপোর্টে বলা হয়েছে, সরকার রাখাইনে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টির জন্য দায়ী সন্ত্রাসীদের ধরতে পূর্ণ শক্তি ব্যবহার করবে।
উল্লেখ্য, শুক্রবার মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশে সর্বশেষ সহিংসতার পর সীমান্ত দিয়ে হাজার হাজার রোহিঙ্গা মুসলিমরা পালিয়ে আবারো বাংলাদেশে ঢোকার চেষ্টা করছে বলে জানা যাচ্ছে। এ ঘটনা নিয়ে দেশটির বিভিন্ন দৈনিকে সরকারের বিভিন্ন ধরণের ভাষ্য প্রকাশিত হয়েছে। বিবিসি।
No comments:
Post a Comment