মিয়ানমারের রাখাইনে নতুন করে সহিংসতা শুরুর পর এ পর্যন্ত তিন হাজারের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে এসেছে বলে ধারণা করছে জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআরের ঢাকা কার্যালয়। আজ সোমবার সংস্থাটির ঢাকা কার্যালয় প্রথম আলোকে এই ধারণার কথা জানায়। কক্সবাজারে ইউএনএইচসিআর এবং অন্য যারা নিবন্ধিত শরণার্থীশিবির পরিচালনা করে, তাদের অনুমানের ওপর ভিত্তি করে এই সংখ্যা জানানো হয়। শরণার্থীশিবির এবং এর আশপাশে আসা রোহিঙ্গাদের দেখে এই অনুমান করা হয়েছে। ইউএনএইচসিআরের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘রোহিঙ্গারা বিচ্ছিন্নভাবে আসছে। ফলে তাদের আসার সংখ্যাটি দ্রুত পরিবর্তিত হচ্ছে। যারা আসছে, তাদের মধ্যে নারী-শিশুর সংখ্যাই বেশি। শিশুদের অনেকেই আবার পরিবার বা বাবা-মা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে আসছে।’ সংস্থাটি বলছে, সীমান্তে এখন তীব্র উত্তেজনা চলছে।
এ কারণে সেখানে মানবিক সহায়তা কার্যক্রম পরিচালনাকারী সংস্থাগুলো যেতে পারছে না। গণমাধ্যমের প্রতিবেদন উদ্ধৃত করে সংস্থাটি জানায়, বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তে হাজারো রোহিঙ্গা আটকে আছে। স্থানীয় লোকজন তাদের খাদ্য ও পানি দিয়ে সহায়তা করছে। ইউএনএইচসিআর ও জাতিসংঘের বিশ্বখাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি) বাংলাদেশে নতুন আসা রোহিঙ্গাদের শুকনো খাবার, স্বাস্থ্য পরিষেবা ও প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে সহায়তা করছে। নতুন করে সংকট তীব্র হওয়ার পর বাংলাদেশ সরকারের গৃহীত মানবীয় সহায়তার প্রশংসা করেছে ইউএনএইচসিআর। প্রতিষ্ঠানটির ঢাকা কার্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তায়বা শরিফ বলেন, ‘শরণার্থীদের জন্য মানবিক সহায়তা নিশ্চিত করার প্রয়াসে বাংলাদেশ সরকারকে সার্বিক সহযোগিতা প্রদান করতে ইউএনএইচসিআর প্রস্তুত রয়েছে।’ সম্প্রতি রাখাইনে নতুন করে সহিংসতা ও দমন-পীড়ন শুরু হয়েছে। সহিংসতার মুখে প্রাণ বাঁচাতে হাজারো রোহিঙ্গা বাংলাদেশ সীমান্তের দিকে ছুটে আসছে। তারা অনুপ্রবেশের চেষ্টা করছে। অনেকে অনুপ্রবেশ করতে সক্ষমও হয়েছে। গত বছরের অক্টোবরে রাখাইনে একই কায়দায় দমন-পীড়ন শুরু হয়েছিল। তখন হাজারো রোহিঙ্গা বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করে। ইতিমধ্যে মিয়ানমারের কয়েক লাখ নাগরিককে আশ্রয় দিয়েছে বাংলাদেশ। নতুন অনুপ্রবেশে গভীর উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে।
No comments:
Post a Comment