ঘুম’ জীবন জগতের অতি পরিচিত এক অনুষঙ্গ। প্রাণিবিজ্ঞানীদের মতে ঘুম দিয়েই জীবনের সূচনা। আবার গভীর ঘুম দিয়েই জীবনের অবসান। জীবনের শুরু ও শেষের মাঝামাঝি সময়টাও ঘুম অত্যন্ত প্রয়োজনীয় বিষয়। চিকিত্সাবিজ্ঞানে শরীর সুস্থতার জন্য ঘুম অতি দরকারি উপাদান। ব্যত্যয় ঘটলে নানা স্বাস্থ্য সমস্যা এমনকি মানসিক বিকৃতিও ঘটতে পারে বলে অভিজ্ঞ মহলের অভিমত।
ঘুম নিয়ে তাই সবাই কম-বেশি চিন্তিত। বেশি ঘুম হলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি এ নিয়ে খুন একটা কথা বাড়ান না। কিন্তু সমস্যা হলো নির্ঘুম দলকে নিয়ে। শারীরবৃত্তীয় নানা জটিলতায় ঘুমের রাজ্য সীমিত হতে পারে। এজন্য নেপথ্য কারণ খুঁজে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ। অথচ কেউ কেউ ঘুম নিয়ে বাড়াবাড়ি করতে গিয়ে বাড়তি নির্ঘুম পরিস্থিতি ডেকে আনেন। যা কোনোভাবেই কাম্য নয়। এক্ষেত্রে বিশেষত চিকিত্সকের শরণাপন্ন হওয়ার পাশাপাশি হালকা ব্যায়াম ও সুষম খাদ্য গ্রহণ চমত্কার ফল দিয়ে থাকে। মোটকথা ঘুম নিয়ে এ পর্যন্ত বহু কথা হয়েছে। সর্বশেষ এক মজার তথ্য জানিয়েছেন একদল গবেষক। তাদের মতে, মাত্র ছয় মিনিটের ‘বিড়াল ঘুম’ বা তন্দ্রাভাব স্মৃতি পরীক্ষায় ব্রেনকে যথেষ্ট কার্যকর অবস্থায় নিয়ে যেতে পারে।
ইউনিভার্সিটি অব ডাসেলডর্ফ-এর একদল গবেষক নিউ সায়েন্টিস্ট সাময়িকীতে প্রকাশিত এক রিপোর্টে উল্লেখ করেছেন, কিছুসংখ্যক ছাত্রের ওপর সমীক্ষা চালিয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেয়েছেন। তারা জানান, এক সেট শব্দ মুখস্ত বলার জন্য কিছুসংখ্যক শিক্ষার্থীকে বাছাই করা হয়। এদের দুই দলে বিভক্ত করে প্রথম দলকে পরীক্ষা নেয়ার আগে ছয় মিনিট চোখ বন্ধ রেখে সংক্ষিপ্ত ‘বিড়াল ঘুম’-এর সুযোগ দেওয়া হয়। বাকিদের দেওয়া হয় দীর্ঘ ঘুমের সুযোগ। ঘুম শেষে পরীক্ষা নিয়ে দেখা গেছে স্মৃতি পরীক্ষায় ভাল করেছে প্রথম দল। এতে গবেষক দল এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছেন যে, মাত্র ছয় মিনিট চোখ বন্ধ রেখে সংক্ষিপ্ত ঘুম বা তার একটি পর্যায়ে ব্রেনের সেল বা কোষগুলো অধিক কর্মক্ষম হয়। তাতে স্মৃতিশক্তি প্রখরতা লাভ করে আশ্চর্য গতিতে। অবশ্য এতে দ্বিমত পোষণ করেছেন ব্রিটেনের একজন প্রখ্যাত চিকিত্সক।
লাফরফে ইউনিভার্সিটির স্লিপ রিসার্চ সেন্টারের (ঘুম গবেষণা কেন্দ্র) প্রফেসর জিম হর্নের মতে, সমীক্ষাটি গুরুত্বপূর্ণ তাতে সন্দেহ নেই। তবে স্মৃতি বা স্মরণশক্তি বৃদ্ধিতে এটিই একমাত্র কারণ তেমনটি তিনি মনে করেন না। এ ব্যাপারে আরো নিবিড় গবেষণা দরকার। তবে গবেষক দলের প্রধান ড. ওল্যাফ লাহন বলেন, সংক্ষিপ্ত ঘুম বা তন্দ্রাচ্ছন্নভাব ব্রেনের কোষগুলো সজাগ করে তোলে। একই কারণে তন্দ্রালুভাব কেটে যাবার পর স্মরণশক্তি বৃদ্ধি পায়। —সূত্র : বিবিসি অনলাইন
No comments:
Post a Comment