একজন মুমিনের অকাট্য বিশ্বাস হলো এই জীবনই শেষ নয়, মৃত্যুর পর আরো একটি জীবন রয়েছে। পার্থিব এই জীবন ক্ষণস্থায়ী। কিন্তু এরপর যে জীবন রয়েছে এর কোনো সীমা-পরিসীমা নেই। এজন্য একজন বিশ্বাসী মানুষের কাছে দুনিয়ার চেয়ে পরকালের প্রস্তুতিই মুখ্য। পবিত্র কোরানের ভাষায় এই দুনিয়া হলো একটি খেলাঘরের মতো। দুনিয়ার জীবনটা আখেরাতের তুলনায় কিছুই নয়। বলা হয়, আটলান্টিক মহাসাগরে আঙ্গুল ডুবালে এর মাথায় যে এক দুই ফোঁটা পানি উঠে আসে সেটা হলো দুনিয়ার জীবন। আটলান্টিক মহাসাগরের পানির সঙ্গে যেমনিভাবে আঙ্গুলে ওঠে আসা এক দুই ফোঁটা পানির তুলনা হতে পারে না তেমনি দুনিয়ার জীবনের সঙ্গে আখেরাতের জীবনের কোনো তুলনা করা যায় না। এজন্য রাসুল (সা.) আমাদের আখেরাতমুখী জীবন, আখেরাতমুখী টার্গেট বানানোর নির্দেশ দিয়েছেন।
একজন মুমিনের টার্গেট হওয়া উচিত আখেরাত। আমরা সবাই আখেরাতের যাত্রী। দুনিয়ার জাহাজে করে আল্লাহর পথে চলতে শুরু করেছি। আমরা এগিয়ে চলছি আল্লাহর দিকে। জান্নাত কিংবা জাহান্নামের দিকে। নবীজি বলেছেন, তোমরা দুনিয়াতে থাকো কিন্তু দুনিয়াকে অন্তর দিও না। দুনিয়াকে তোমরা মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার কর। দুনিয়াকে টার্গেট বানিও না।
আজরাইল (আ.) যখন আমাদের সামনে হাজির হয়ে যাবে তখন আর কিছু করার থাকবে না। আমাদের দুনিয়া ছেড়ে চলে যেতে হবে। এজন্য আল্লাহতাআলা আমাদের যে ফর্মুলা দিয়েছেন সে অনুযায়ী চললে দুনিয়ার জীবন সুন্দর হবে। দুনিয়ার জীবনে কোনো অন্যায় থাকবে না, কোনো অবিচার থাকবে না। দুনিয়ায় কেউ কারো ওপর জুলুম করলে কেয়ামতের দিন তার মাথায় জুলুমের বোঝা চাপিয়ে দেয়া হবে। আল্লাহতাআলা সেদিন সমস্ত জুলুমের বদলা দেবেন। কেয়ামতের ভয় ছাড়া, গোনাহের ভয় ছাড়া, আখেরাতের জীবনের ভয় ছাড়া দুনিয়ার জীবনে কখনো শান্তি আসবে না।
এজন্য পার্থিব জীবন সুন্দর করতে সবার আগে দরকার পরকালের ভয়। কারো মধ্যে পরকালের ভয় থাকলে সে কোনো অন্যায় কাজে জড়াতে পারে না। অল্প কিছুদিনের এই দুনিয়া যেভাবেই কাটুক তা মেনে নিয়ে অনন্ত অসীম কালের জন্য প্রস্তুতি গ্রহণই হলো একজন মুমিনের প্রধান দায়িত্ব। যারা এই পার্থিব জীবনকে কাজে লাগাতে পারবেন তাদের জন্যই রয়েছে পরকালের মুক্তি ও পুরস্কার।
Saturday, December 2, 2017
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment