প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড আরো জোরদারে পাবলিক- প্রাইভেট পার্টনারশীপকে (পিপিপি) অধিকতর শক্তিশালী করার ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেছেন, সরকার দেশের উন্নয়নের গতিকে আরো ত্বরান্বিত করতে চায়। তবে, সরকারের একার পক্ষে তা সম্ভব নয়। এজন্য পিপিপি’র সহযোগিতা প্রয়োজন। আর তাই পিপিপি’র কনসেপ্ট মাথায় রেখে অগ্রগতি থেকে আরো সুফল লাভে দেশের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড এগিয়ে নিতে হবে। গতকাল বৃহস্পতিবার পিপিপি কর্তৃপক্ষের প্রথম বোর্ড অব গভর্নরসের সভায় সভাপতির বক্তৃতায় প্রধানমন্ত্রী দক্ষিণ কোরিয়ার উন্নয়নে বেসরকারি খাতের ভূমিকা এবং বাংলাদেশেও পিপিপিতে বাস্তবায়িত কয়েকটি প্রকল্পের কথা তুলে ধরে বলেন, সেখানে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি খাতও উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের ব্রিফিং করেন।
গত সেপ্টেম্বরে ‘বাংলাদেশ সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্ব আইন-২০১৫’ পাস হওয়ার পর গঠন করা হয় পিপিপি কর্তৃপক্ষ। গতকাল প্রথম বোর্ড অব গভর্নরসের সভায় গত কয়েক বছরের পিপিপি কার্যক্রমের বাস্তবায়ন ও অগ্রগতি তুলে ধরা হয়। সভায় জানানো হয়, পিপিপির পাইপলাইনে বিভিন্ন খাতের ৪৩টি প্রকল্প রয়েছে। এসব প্রকল্পে সম্ভাব্য ১৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ আসবে। এছাড়া পিপিপি প্রকল্পগুলোর উন্নয়ন, বেসরকারি অংশীদার নির্বাচন এবং চূড়ান্ত চুক্তি স্বাক্ষর এবং সামগ্রিক বিনিয়োগের সম্ভাব্য পরিমাণ ও সময় সম্পর্কে সভাকে অবহিত করা হয়। এতে জানানো হয় যে ৬টি প্রকল্পের চূড়ান্ত চুক্তি হয়েছে। পিপিপি কারিগরি তহবিলের ৭৭ কোটি টাকা ব্যয়ে ১৮টি প্রকল্পের সম্ভাব্যতা সমীক্ষা শেষ হয়েছে। এ প্রকল্পগুলোতে প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ আসতে পারে। এছাড়া বেসরকারি অংশীদার নির্বাচনের চূড়ান্ত পর্যায়ে ১১টি প্রকল্পে ১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ হতে পারে। সম্ভাব্য ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগে ১০টি প্রকল্প সমীক্ষার কাজ যাচাই পর্যায়ে রয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী প্রেস সচিব বলেন, সভায় সংশ্লিষ্ট আইন মোতাবেক বোর্ডের চেয়ারপার্সন হিসেবে প্রধানমন্ত্রী পলিসি ইস্যু এবং পিপিপি কতৃর্পক্ষের চেয়ারম্যান হিসেবে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব প্রকল্প বাস্তবায়নের বাধা নিরসনের বিষয় তদারকি করবেন।
আন্তঃরাষ্ট্রীয় কমিশন গঠনের ওপর
গুরুত্বারোপ রাশিয়ার রাষ্ট্রদূতের
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় এবং পরবর্তীতে যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ পুনর্গঠনে রাশিয়ার ভূমিকা শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করে বলেছেন, বাংলাদেশ ও রাশিয়ার মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারণে অমিত সম্ভাবনা রয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তার তেজগাঁওস্থ কার্যালয়ে রাশিয়ার বিদায়ী রাষ্ট্রদূত অ্যালেকজান্ডার এ নিকোলায়েভ’র সঙ্গে সাক্ষাত্কালে তিনি এ কথা বলেন। সাক্ষাত্ শেষে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের ব্রিফিং করেন।
দ্বিপাক্ষিক আলোচনায় প্রধানমন্ত্রী দু’দেশের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্যের সাম্প্রতিক প্রসার এবং আরো সম্প্রসারণে রাশিয়ার আগ্রহে সন্তোষ প্রকাশ করেন। বাংলাদেশের বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে বিশেষ করে বিদ্যুত্ ও জ্বালানি ক্ষেত্রে রাশিয়ার অব্যাহত সহযোগিতার জন্য প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্রদূতকে ধন্যবাদ জানান। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাশিয়ার রাষ্ট্রদূতের মাধ্যমে সে দেশের প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকেও শুভেচ্ছা জানান।
বাংলাদেশে বিগত চার বছর দায়িত্ব পালনকালীন সময়ে সহযোগিতার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানান রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত।
অভিনেতা ফরিদ আলীর চিকিত্সায়
প্রধানমন্ত্রীর অনুদান
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চিকিত্সাধীন মুক্তিযোদ্ধা ও অভিনেতা ফরিদ আলীর পরিবারকে ২৫ লাখ টাকা অনুদান দিয়েছেন। গতকাল দুপুরে প্রধানমন্ত্রী তার কার্যালয়ে ফরিদ আলীর স্ত্রী মনোয়ারা বেগম ও পরিবারের অন্য সদস্যদের কাছে অনুদানের চেক হস্তান্তর করেন। প্রধানমন্ত্রী গতকাল আরও দুটি পরিবারকে আর্থিক সহায়তা দিয়েছেন। তাদের মধ্যে হবিগঞ্জের বাহুবল উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি প্রয়াত কাকুল শাহরিয়ার চৌধুরীর স্ত্রী শাহিনা আক্তার চৌধুরীকে ১০ লাখ এবং লাখাই উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক প্রয়াত মোর্শেদ কামাল তালুকদারের স্ত্রী লাকী আক্তারকে ছয় লাখ টাকার চেক দেন শেখ হাসিনা।
No comments:
Post a Comment