Social Icons

Thursday, March 10, 2016

আরেফিন রুমি ও বিতর্কিত শিল্পীসত্তা

শিল্পী হিসেবে বেশ জনপ্রিয় ছিলেন আরেফিন রুমি। কিন্তু সেটা কিছুটা সময়ের জন্য। প্রেম-বিয়ে এসব জটিলতায় সম্প্রতি তার জনপ্রিয়তায় ভাটা পড়েছে। শুধু তাই নয়, একাধিক বিয়ে এবং ডিভোর্সের জন্যও শিল্পী সমাজে তাকে নিয়ে রয়েছে ব্যাপক সমালোচনা। শিল্পী সমাজে গ্রহণযোগ্যতার কাতারে তার অবস্থান প্রায় শূন্যের কোটায়। সময়টা খুব বেশি দিনের নয়। ২০১১ সাল। সঙ্গীতশিল্পী হিসেবে আরেফিন রুমির গাওয়া ‘তোমার চোখে আকাশ আমার, চাঁদ উজাড় পূর্ণিমা, ভেতর থেকে বলছে হৃদয় তুমি আমার প্রিয়তমা’ গানটি শ্রোতাদের কানে লেগেছিল। জাহিদ আকবরের লেখা এ গানটি নিয়ে যখন জনপ্রিয়তার ছোঁয়া পেয়েছেন আরেফিন রুমি, ঠিক তখনই তার জীবনে আসে অনন্যা। ভালোবেসে বিয়ে করেছিলেন তাকে। ভালোবাসার ঘর প্রস্ফুটিত করে তাদের সঙ্গে যোগ হল নতুন অতিথি। নাম তার আরিয়ান। অনন্যা, আরিয়ান এবং নতুন জনপ্রিয়তা- সবকিছু নিয়ে বেশ ভালোই কেটে যাচ্ছিল সুখের দিনগুলো। দিন দিন জনপ্রিয়তা তার বাড়ছিল। অসংখ্য ভক্তকুলের মাঝে নিজেকে হারিয়ে রুমি যেন এক অন্য রুমিতে পরিণত হয়। দেশ ছাড়িয়ে সুদূর আমেরিকায়ও যে তার ভক্তকুল তৈরি হয়েছে সেটা অজানাই ছিল। যদি না আমেরিকায় না যেতেন, তাহলে হয়তো সেটা বুঝতে পারতেন না। নিজের ক্যারিয়ারের প্রসার ঘটাতে ছুটে গেলেন আমেরিকায়। তার পরপরই সুখের পাখিটা তাকে ছেড়ে যাওয়ার প্রস্তুতি গ্রহণ করে। একেবারেই তার মনের অজান্তে। ঘুণাক্ষরেও টের পাননি রুমি। দেশের মাটিতে ভালোবাসার ঘরে অনন্যা ও আরিয়ান যে তার প্রতীক্ষায় প্রহর গুনছে! আমেরিকায় গিয়ে রুমি মেতে ওঠেন এক অজানা নেশায়। যেন নতুন সুখের কোলে মাথা গুঁজে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছিলেন! সেই সুখের নাম কামরুন্নেসা। যার অপর নাম পরকীয়া। বুক ভরা ভালোবাসা অকাতরে বিলিয়ে দিচ্ছিলেন কামরুন্নেসার হৃদয় গহিনে। এই নেশা টাকার নেশা। এই নেশা মার্কিন মুলুকে নিজের স্থায়ী বসবাসের নেশা। রুমি যখন কামরুন্নেসার বুকে মাথা গুঁজে ভালোবাসার পরশ বুলাচ্ছেন ঠিক তখন বাংলাদেশের একটি ছোট্ট কুঠুরিতে খেলনা নিয়ে আরিয়ান আধো আধো বুলিতে বাবাকে খুঁজছিলেন। মা অনন্যা বাবার কানে ফোনের রিনিঝিনি শব্দ তোলার চেষ্টা করছিলেন। কিন্তু সেই শব্দ রুমির কান থেকে হৃদয়ের গহিনে পৌঁছায়নি। আর পৌঁছায়নি বলেই দেশে ফিরে আসেন ওয়াদা করে। যে ওয়াদা একটি ছোট্ট সুখের সংসারে লাগিয়ে দিয়েছিল বিচ্ছেদের অনল। যে ওয়াদা অন্য কারও হৃদয়ে স্বপ্ন বোনার বীজ বপন করে দিয়েছিল। ভালোবাসার টানে দেশে ফিরে আসেন কামরুন্নেসা। রুমিও তাকে সাদরে গ্রহণ করেন। একেবারে আপন করে। নিজের বেডরুমে। অনন্যার কিচ্ছু বলার ছিল না। শুধু আরিয়ানের মুখ পানে চেয়ে একটা দীর্ঘশ্বাস বের হয়ে গিয়েছিল। সেটা হয়তো ঠেকেছিল আকাশের সুদূর প্রান্তে। ঠিক যেখান থেকে ভাগ্যবিধাতা নিয়ন্ত্রণ করেন বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ড। দুই বধূকে নিয়ে রুমি আয়েশে ছবি তোলেন। পীরের দরবারে গিয়ে দোয়া মাঙ্গেন। এক বুক কষ্ট নিয়ে রুমির পাশে হাসিমুখে দাঁড়ালেও অনন্যার হৃদয়টা তখন ছিঁড়ে যাচ্ছিল। অন্যদিকে কামরুন্নেসার হাসিমুখ দেখে আনন্দে বিগলিত হয়ে ওঠে রুমি। সময় গড়িয়ে যায়। দুই বধূর এক স্বামী- বিষয়টি যেন মেনে নিতে পারছিলেন না কামরুন্নেসা। স্বামীর ভাগ দিতে নারাজ তিনি। তাই অনন্যার ওপর নেমে আসে নির্যাতনের খক্ষ। সহ্য করতে না পেরে অনন্যাও প্রতিবাদী হয়ে উঠেন। মামলা ঠুকে দেন। গ্রেফতার হন রুমি। জেলও খাটেন দু’বার। আপসের মাধ্যমে স্থায়ীভাবে অনন্যাকে ডিভোর্স দেন রুমি। মায়ের সঙ্গে দু’ফোঁটা চোখের জল নিয়ে বাবার গৃহ ত্যাগ করে আরিয়ান। বছর গড়িয়ে কামরুন্নেসার কোল জুড়েও আসে নতুন এক অতিথি। নাম তার আয়ান। রুমি-কামরুন্নেসার সুখের সংসারে আয়ানের আগমন অনেকটা বিষাদের বাতাস বয়ে এনেছিল বোধহয়। নয়তো অনন্যার দীর্ঘশ্বাস কিংবা ছোট্ট আরিয়ানের অভিশাপ রুমিকে স্বস্তিতে থাকতে দেয়নি। আমেরিকায় আয়ানকে নিয়ে বেড়াতে গেলে রুমিও একাকী নিজেকে নিয়ে ভাবার সুযোগ পান। এই সুযোগে অন্য একটি মেয়ে ঢুকে পড়ে তার সাময়িক একাকী জীবনে। ভাবনার খিঞ্চি যখন মগজে কুড়কুড় করছিল ঠিক তখন কামরুন্নেসার বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে তাকেও ডিভোর্স দেন রুমি। অভিযোগে উল্লেখ করেন, কামরুন্নেসা তার সাবেক স্বামীর সঙ্গে আমেরিকায় অন্তরঙ্গ সময় কাটাচ্ছেন। ডিভোর্সের কথা শুনে তৎক্ষণাৎ আমেরিকা থেকে দেশে ফেরেন কামরুন্নেসা। দেশে ফিরে রুমির বাড়িতে আর ঠাঁই হয়নি। ঠাঁই না পেয়ে মুখ খোলেন তিনি। রুমির মায়ের অত্যাচার আর অন্য এক মেয়ের প্রতি রুমির নেশার কথা অকপটে বলেন মিডিয়ায়। পাশাপাশি এই ডিভোর্সের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়ার কথাও ভেবেছেন তিনি। কথাটি যখন রুমির কানে পৌঁছায় ঠিক তখনি তার সিদ্ধান্ত বদলে যায়। জেলের ঘানি টানার কথা ভুলে যাননি তিনি। আবারও কামরুন্নেসাকে ঘরে তোলেন তিনি। তবে কোন প্রক্রিয়ায় সেটা এবার আর প্রকাশ করেননি। যে রুমি নিজেকে সুফি তরিকার লোক বলে বাইরে বলে বেড়ান সে কীভাবে তালাক দেয়া স্ত্রীকে ফের ঘরে তুললেন সেটা অজানাই রয়ে গেল। ব্যক্তি জীবনে রুমির এসব কেচ্ছা-কাহিনী শিল্পী সমাজকে করেছে বিব্রত। একবার নয়, দুবার নয়, বারবার তার এমন পরস্ত্রীকাতরতা শিল্পীদের প্রতি মানুষের সম্মান ক্ষুণ্ণ করছে বলেই সাধু সমাজের অভিযোগ। শুধু ব্যক্তি জীবন নয়, কর্মজীবনেও রুমির বিরুদ্ধে অভিযোগের পাল্লা ভারী। নকল সঙ্গীত, নকল সুরের জন্য নিন্দিতের কাতারে তার নাম লেখা হয়েছে অনেক আগেই। তবুও যেন কোনো বিকার নেই তার। আরেফিন রুমির এসব বেহিসেবি এবং অসামাজিক কর্মকাণ্ডে ক্ষুব্ধ শিল্পী সমাজ। চারিত্রিক দুর্বলতা কমবেশি অনেকেরই রয়েছে। কিন্তু সেটা প্রকাশ্যে এভাবে করে বেড়ানোটা শিল্পী সমাজের জন্য কলংকিত বটে- রুমি সম্পর্কে এমনই মন্তব্য বিজ্ঞজনদের।

No comments:

Post a Comment

 

© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত । এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি

সম্পাদকীয় কার্যলয়

Rua padre germano mayar, cristo rio -80040-170 Curitiba, Brazil. Contact: +55 41 30583822 email: worldnewsbbr@gmail.com Website: http://worldnewsbbr.blogspot.com.br

সম্পাদক ও প্রকাশক

Jahangir Alom
Email- worldnewsbb2@gmail.com
worldnewsbbbrazil@gmail.com
 
Blogger Templates