যৌনদাসী সরবরাহ নির্বিঘ্ন করতে ইসলামিক স্টেট (আইএস) বেশ কয়েক ধরনের জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতির শরণ নেয়। শনিবার প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে নিউ ইয়র্ক টাইমস।
আইএসের বন্দিদশা থেকে পালিয়ে আসা তিন ডজনেরও বেশি ইয়াজিদি নারীর সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়। নারীরা যেন গর্ভবতী না হয়ে পড়ে এবং তাদের যেন যোদ্ধাদের কাছে পাঠানো যায়, এ বিষয়টি নিশ্চিত করতে আইএস ‘খাওয়ার বা ইনজেকশনের মাধ্যমে, আবার কখনো কখনো উভয়ভাবে জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতির শরণ নেয়’ বলে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। এতে আরো বলা হয়, অন্তত একটি ঘটনায়, যৌনক্ষুধা মেটানোর জন্য তৈরি রাখতে জোর করে এক নারীর গর্ভপাত ঘটানো হয়েছে, অন্যান্যদেরও তা করতে চাপ দেওয়া হয়েছে।
ইয়াজিদিদের ‘শয়তানের উপাসক’ বলে মনে করে আইএস জঙ্গিরা। ইয়াজিদিদের ধর্মবিশ্বাসে খ্রিস্টান, জরোথ্রুস্ট্রীয় ও ইসলাম ধর্মের মিশেল আছে। আইএসের হামলা থেকে আত্মরক্ষায় প্রায় পাঁচ লাখের মতো ইয়াজিদি নিজেদের ঘরবাড়ি ছেড়ে উত্তর ইরাকের কুর্দিস্তানের শিবিরে আশ্রয় নিয়েছে। ২০১৪ সালের গ্রীষ্মকাল থেকে গত বছরের শেষ দিক পর্যন্ত প্রায় পাঁচ হাজার ইয়াজিদি নারী-পুরুষ আইএসের জঙ্গিদের হাতে বন্দি হয়েছে। এদের মধ্যে প্রায় দুই হাজার জন আইএসের স্বঘোষিত ‘খিলাফত’ থেকে পালিয়ে আসতে পেরেছেন বলে অধিকার কর্মীরা জানিয়েছেন।
ইরাকে জাতিসংঘ পরিচালিত একটি ক্লিনিকে ধর্ষণের শিকার প্রায় ৭০০ ইয়াজিদি নারী চিকিৎসা নিয়েছেন। আইএসের হাতে বন্দি থাকার সময় এসব নারীদের মধ্যে মাত্র ৩৫ জন গর্ভবতী হয়েছেন বলে ওই ক্লিনিকের এক গাইনেকোলোজিস্ট নিউ ইয়র্ক টাইমসকে জানিয়েছেন। এই ক্লিনিকটির পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান ইরাকি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দোহুক দপ্তরের প্রধান ড. নেজার ইসমেত তায়িব নিউ ইয়র্ক টাইমসকে জানিয়েছেন, গর্ভবতীর এই সংখ্যা প্রত্যাশিত সংখ্যার চেয়ে অনেক কম।
উদ্দেশ্যমূলক ভাবে কয়েক হাজার নারী ও বালিকাকে অপহরণ ও ধর্ষণের জন্য আইএসকে অভিযুক্ত করেছে জাতিসংঘ ও মানবাধিকার সংস্থাগুলো। বালিকাদের মধ্যে ১২ বছর বয়সীরাও রয়েছে। এদের অনেককেই পুরস্কার হিসেবে যোদ্ধাদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে ও অন্যান্যদের যৌনদাসী হিসেবে বিক্রি করা হয়েছে। এ বিষয়ে কোনো লুকোছাপার চেষ্টা তো দূরে থাকুক, দাসত্বের বিষয়টি দেখভালের জন্য আইএস একটি বিভাগ খুলেছে। ডিসেম্বরে এ ধরনের একটি বিভাগের অস্তিত্ব নিশ্চিত করে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল বার্তা সংস্থা রয়টার্স।নিউইয়র্ক টাইমস ও রয়টার্স।
No comments:
Post a Comment