Social Icons

Thursday, October 13, 2016

স্বাগত শি জিনপিং

  এই সফর সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় নেবে :শেখ হাসিনা
 
**  ২৫টি চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক সই হবে
 
**  ৩০ বছর পর চীনা প্রেসিডেন্টের প্রথম সফর
 
**  এই সফরে ভারতসহ কোনো দেশের সম্পর্কে ক্ষতি হবে না
 
ঐতিহাসিক এক সফরে আজ শুক্রবার ঢাকা আসছেন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। বিশ্বের দ্বিতীয় প্রধান ও এশিয়ার শীর্ষ অর্থনৈতিক শক্তি চীনের প্রেসিডেন্টকে বরণ করতে প্রস্তুত ঢাকা। শি’র এই রাষ্ট্রীয় সফরে বাংলাদেশ ও চীনের সম্পর্কে নয়া দিগন্ত উন্মোচন হবে বলে আশা করছে দুই দেশ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রেসিডেন্ট শিকে স্বাগত জানিয়ে বলেছেন, এই সফর সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় নেবে। নতুন যুগের সূচনা করবে বাংলাদেশ ও চীন। অন্যদিকে চীনের উপ-পররাষ্ট্র মন্ত্রী কং জুয়ানিউ বেইজিং এ বলেন, এই সফর হবে মাইল ফলক।
 
৩০ বছর পর চীনা প্রেসিডেন্টের এই সফরে দ্বিপাক্ষিক, অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক, আঞ্চলিক বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করবেন শেখ হাসিনা ও শি জিনপিং। সব মিলিয়ে ২২ ঘণ্টার সফরকালে দুই নেতার উপস্থিতিতে দুই দেশের মধ্যে অন্তত: ২৫টি চুক্তি ও সমঝোতা স্বাক্ষর হবে। সব মিলিয়ে আর্থিক সহায়তার পরিমাণ ৪০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ছাড়িয়ে যেতে পারে। দুইদেশের মধ্যে অর্থনৈতিক সহযোগিতা, বাণিজ্য, বিনিয়োগ, বিদ্যুত্ ও জ্বালানি, তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তি, ভৌত অবকাঠামো, সড়ক ও সেতু, যোগাযোগ ও জলপথে যোগাযোগ, কৃষিসহ বিভিন্ন খাতে চুক্তিগুলো সই হবে।
 
২০১০ ও ২০১৪ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চীন সফরকালে ঢাকা ও বেইজিং সম্পর্ক নতুন মাত্রা পায়। প্রেসিডেন্ট শি’র ফিরতি সফরে তা আরো নতুন উচ্চতায় যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
 
চীনা বার্তা সংস্থা সিনহুয়া বুধবার এক একান্ত সাক্ষাত্কারে  প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রেসিডেন্ট শি’র সফরে বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও অর্থনৈতিক সহযোগিতার ক্ষেত্রে নতুন যুগের সূচনা হবে। আমরা খুবই আনন্দিত এবং সম্মানিত বোধ করছি যে, প্রেসিডেন্ট শি বাংলাদেশে আসছেন। দক্ষিণ এশিয়ার জন্য এই সফর খুবই গুরুত্বপূর্ণ। দুই দেশ পাঁচটি নীতির উপর নির্ভরশীল। শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান, ভাল প্রতিবেশীসুলভ মনোভাব, পারস্পরিক আস্থা, বিশ্বাস, অন্যের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করার নীতিতে দুই দেশ বিশ্বাসী। বাংলাদেশ এক চীন নীতিতে অবিচল থেকে সার্বভৌমত্ব ও অখণ্ডতায় সমর্থন করে। প্রধানমন্ত্রী সাক্ষাত্কারে বলেন, চীন বাংলাদেশের বৃহত্ বাণিজ্যিক অংশীদার। আমাদের স্বপ্ন পূরণে চীন পাশে থাকছে।
 
প্রেসিডেন্ট শি ২০১০ সালে আরেকবার বাংলাদেশ সফর করেন। তখন তিনি ছিলেন দেশটির ভাইস প্রেসিডেন্ট। ২০১৩ সালে তিনি চীনের প্রেসিডেন্ট হন। ২০১৪ সালে তিনি ভারত সফর করেন। এবার কম্বোডিয়া, বাংলাদেশ ও ভারত সফরে বের হয়েছেন।
 
ব্যস্ততম ২২ ঘণ্টা
 
প্রেসিডেন্ট শি’র প্রায় ২২ ঘণ্টা ঢাকা সফর শুরু হবে আজ সকাল ১১টা ৪০ মিনিটে। নমপেন থেকে বিশেষ ভিভিআইপি ফ্লাইটযোগে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে এসে পৌঁছলে তাকে লালগালিচা সংবর্ধনা দেওয়া হবে। রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ তাকে স্বাগত জানাবেন। চীনা প্রেসিডেন্টকে বহনকারী বিমান বাংলাদেশের আকাশসীমায় পৌঁছলে বিমান বাহিনীর জেট বিমান স্বাগত জানিয়ে পাহারা দিয়ে নিয়ে আসবে। পর্যায়ক্রমে বিমান বন্দরে ২১ বার তোপধ্বনি, পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ, সালাম গ্রহণ, গার্ড অব অনার প্রদান করা হবে। বিমান বন্দর থেকে তিনি যাবেন হোটেল লা মেরিডিয়ান-এ। বিকাল তিনটায় যাবেন প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও প্রেসিডেন্ট শি প্রথমে একান্ত বৈঠক ও পরে দ্বিপাক্ষিক আলোচনা করবেন। এরপর দু’দেশের মধ্যে প্রায় ২৫টি চুক্তি ও সমঝোতা স্বাক্ষর হবে। বিকালে হোটেলে জাতীয় সংসদের স্পীকার শিরীন শারমিন চৌধুরী এবং পরে বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া সাক্ষাত্ করবেন। সন্ধ্যা ছয়টায় তিনি যাবেন বঙ্গভবনে। প্রেসিডেন্ট আবদুল হামিদের সঙ্গে বৈঠকের পর রাষ্ট্রীয় ভোজসভায় যোগ দেবেন। শনিবার সকাল ৮টা ২০ মিনিটে যাবেন সাভারে। জাতীয় স্মৃতিসৌধে স্বাধীনতা যুদ্ধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাবেন তিনি। সকাল দশটায় যাবেন বিমানবন্দরে। বিশেষ বিমানযোগে ভারতের গোয়ার উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করবেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিদায় জানাবেন।
 
প্রায় দু’শ সফরসঙ্গী
 
শি জিনপিং এর সফরে মন্ত্রী, সরকারি কর্মকর্তা, নিরাপত্তা কর্মী, ব্যবসায়ী ও সাংবাদিকসহ প্রায় দু’শ সফরসঙ্গী থাকছেন। চীনা কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিসি) কেন্দ্রীয় গবেষণা সেলের প্রধান ওয়াং হিউনিং, সিপিসি প্রধান কার্যালয়ের প্রধান লি জানসু, স্টেট কাউন্সিলর ইয়াং জিয়েছি। পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং উই, উন্নয়ন মন্ত্রী ঝু সাওসি, অর্থমন্ত্রী লো জিইউ, বাণিজ্যমন্ত্রী গাও হুচেং, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর ঝাও সিয়া চুনসহ ১৩ জন নীতি নির্ধারক, ৩৩ জন কর্মকর্তা, ৩৪ জন নিরাপত্তা ও গণমাধ্যম কর্মী, ৪০ জন ব্যবসায়ী, প্রায় ৭০ জন সাংবাদিক রয়েছেন সফরসঙ্গীদের তালিকায়।
 
 ‘এই সফর অন্যদেশের সম্পর্কে কোনো ক্ষতি হবে না’
 
চীনা প্রেসিডেন্টের সফরের ফলে ভারত বা অন্য কোনো দেশের সঙ্গে সম্পর্কে কোনো নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে না। পররাষ্ট্রমন্ত্রী এএইচ মাহমুদ আলী গতকাল বৃহস্পতিবার এক সাংবাদিক সম্মেলনে প্রশ্নের জবাবে সুস্পষ্টভাবে একথা বলেন। তিনি বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আমাদের পররাষ্ট্রনীতির মূল কথা ‘সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারো সঙ্গে বৈরিতা নয়’ প্রণয়ন করেছেন। কারো সঙ্গে আমাদের শত্রুতা নেই। সেই থেকে আমাদের পররাষ্ট্রনীতি পরিচালিত হয়ে আসছে এবং সফলতা এসেছে। মন্ত্রী বলেন, চীনা প্রেসিডেন্টের এই সফর ঐতিহাসিক। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্ব আন্তর্জাতিক নেতৃবৃন্দের আস্থার প্রতীক। সাংবাদিক সম্মেলনে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম ও পররাষ্ট্র সচিব শহীদুল হকসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

No comments:

Post a Comment

 

© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত । এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি

সম্পাদকীয় কার্যলয়

Rua padre germano mayar, cristo rio -80040-170 Curitiba, Brazil. Contact: +55 41 30583822 email: worldnewsbbr@gmail.com Website: http://worldnewsbbr.blogspot.com.br

সম্পাদক ও প্রকাশক

Jahangir Alom
Email- worldnewsbb2@gmail.com
worldnewsbbbrazil@gmail.com
 
Blogger Templates