Social Icons

Saturday, October 1, 2016

স্তন ক্যান্সার : প্রয়োজন সহায়তা ও সচেতনতা

স্তন ক্যান্সার যখন কোনো নারীর হয়, তখন তা যে কেবল রোগীর ওপর প্রভাব ফেলে তাই নয়। পরিবার, বন্ধু-বান্ধব, আত্মীয়-স্বজনের ওপরও এর প্রভাব ফেলে। বিশেষ করে জীবন সঙ্গী তো প্রভাবিত হনই। সংকটাপন্ন এমন রোগীর জন্য, চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় জীবন সঙ্গীর সাহায্য সহানুভূতি, অবলম্বন খুবই প্রয়োজন। স্তন ক্যান্সার চিকিত্সা যখন চলে, নানা পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া তো হয়ই। অস্ত্রোপচার করা হলে এবং লসিকাগ্রন্থি সরিয়ে নিলে ফুলেযায় বাহু। কেমোথেরাপি নিলে হয় ববি বমি ভাব, বমি, কেশহানি, ক্ষুধামন্দা ও ওজন হ্রাস। বিকিরণ চিকিত্সায় অবসাদ, ক্লান্তি, স্তনে ব্যথা, স্তন আয়তনে পরিবর্তন ইত্যাদি ইত্যাদি। অন্যদিকে আবেগ মেজাজেরও হয় পরিবর্তন।
 
স্বশরীরের উপস্থিতি থাকা চাই
 
প্রিয়জনের স্তন ক্যান্সার হলে তাকে অবলম্বন দিতে হয়। আপাত: দৃষ্টে মনে হয় তা সহজ। প্রিয় খাবার ও অনেক সময় রোগীর কাছে বিস্বাদ হয়ে উঠে। এমন কিছু চিকিত্সা আছে যা নেওয়ার পর আগের প্রিয় খাবার তখন ভালো লাগে না। অনেকে স্বাভাবিক সময় যে খাদ্য উপভোগ করতেন এসব খাবার এখন এড়াতে চাইতে পারেন। অনেক নারী চান ডাক্তারের কাছে যেন তার জীবনসঙ্গী তাকে নিয়ে যান এবং সঙ্গে থাকেন। চিকিত্সা হোক বা মামুলী চেক আপ হোক, ডাক্তারের সঙ্গে এমন সেশন্ বেশ ক্লান্তিকর হয়ে উঠে।
 
সে সময় কেউ যদি পরামর্শগুলো নোটবুকে টুকে নেন, দেখভাল করে, পরে বাড়ি নিয়ে যান তখন রোগী বেশ স্বস্থি অনুভব করেন। যতটুকু অন্তরঙ্গ হলে রোগী স্বস্তি পান ততটুকু তাকে দিলে ভালো। চিকিত্সায় তা যৌন ইচ্ছা দমে গেলেও শারীরিক ঘনিষ্ঠতা তিনি চাইতে পারেন। সেদিকে খেয়াল রাখবেন জীবন সঙ্গী।
 
আবেগ ও মনের সঙ্গী হওয়া 
 
মানুষ যখন চাপে থাকে তখন মন খুলে কথা বলার লোক পেলে মানুষ স্বস্তি পায়। আশ্রয় খোঁজে কারো, যিনি কান পেতে তার কথাগুলো শুনবেন, শেয়ার করবেন তার সঙ্গে। জীবন সঙ্গীর কাছে  এমন চাহিদা থাকইে পারে। গবেষণায় দেখা গেছে চিকিত্সা চলার সময় দম্পতি যখন মন খুলে কথা বলেছেন, সেক্ষেত্রে রোগীর দুর্ভোগ অনেক কমে, সম্পর্কের তুষ্ঠিও হয় এতে বেশি। রোগ নির্ণয়ের পর অনেক সিদ্ধান্ত নিতে হয়, সেসময় জীবন সঙ্গীর সক্রিয় ভূমিকা বাঞ্ছনীয়। প্রয়োজন হতে পারে দ্বিতীয় মত নেওয়ার। জীবন সঙ্গীকে ভালো শ্রোতা হতে হয়। সঙ্গী ভয় পেলে সে ভয়কে স্বীকার করে তাকে আস্বস্ত করতে হয়। চট জলদি সমাধান দেবার লোভ সামলানো উচিত, হয়ত এরকম করলে তার উদ্বেগকে তুচ্ছ করার মত ব্যাপার ঘটে, অন্তত: রোগী তা মনে করতে পারেন, আর এরকম মনে হলে অভিমানে হয়ত মনের দুঃখ কষ্টের কথা আর তিনি বলবেনই না।
 
তাকে যেমন উত্সাহ দিতে হবে, তেমনি চিকিত্সার বাস্তব দিক, চিকিত্সা দিলেও কত দিন বেঁচে থাকার সম্ভাবনা এসব ধারণা কৌশলে দেওয়াও উচিত। ধৈর্য রাখা বড় কথা। স্তন ক্যান্সারের চিকিত্সায় নারীর হরমোনসমূহ বিশৃঙ্খল হতে পারে, তখন মন মেজাজ খারাপ হওয়া, বিরক্তিরভাব প্রায়ই হওয়া খুবই স্বাভাবিক। মনে জমে উঠা বাষ্প বের হবার পথও চাই তাদের। এজন্য প্রয়োজন ক্যান্সার সাপোর্ট গ্রুপ। ধ্যান চর্চা, প্রানায়াম বা গান শোনার মত উপায়।
 
রোগীর অবলম্বন কারীর ভূমিকা
 
যিনি রোগীর অবিরাম সঙ্গী, তিনি যেন ভেঙ্গে না পড়েন, এ বড় ক্লান্তিকর, একাকী কাজ, হতাশা মনকে আছন্ন করলেও সঙ্গী প্রিয়জনের কথা ভেবে সহ্য করতে হবে। যিনি পরিচর্যা দেন রোগীকে, তারও চাই মন ভালো করার মত কাজ। হয়ত ছবি দেখা, গলফ খেলা-এসব। রোগীর যথাযথ অবলম্বন হয়ে উঠার জন্য তাদেরকে হতে হয় শান্ত, স্থির, ধৈর্যশীল ও প্রফুল্ল। রোগীর পরিচর্যাকারী বা কেয়ার লিডার যেন বিষন্নতা ও উদ্বেগের শিকার না হন তাও দেখতে হবে। আর সেজন্যই তাদেরকে থাকতে হবে প্রফুল্ল, আর তা থাকার জন্য সব কিছু করতে হবে সঙ্গীকে।
 
 
অধ্যাপক ডা: শুভাগত চৌধুরী
পরিচালক, ল্যাবরেটরি সার্ভিসেস বারডেম, ঢাকা

No comments:

Post a Comment

 

© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত । এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি

সম্পাদকীয় কার্যলয়

Rua padre germano mayar, cristo rio -80040-170 Curitiba, Brazil. Contact: +55 41 30583822 email: worldnewsbbr@gmail.com Website: http://worldnewsbbr.blogspot.com.br

সম্পাদক ও প্রকাশক

Jahangir Alom
Email- worldnewsbb2@gmail.com
worldnewsbbbrazil@gmail.com
 
Blogger Templates