বিদেশি পর্যটক টানতে লোহিত সাগরের সৈকতে আন্তর্জাতিক মানের বেশ কয়েকটি বিলাসবহুল রিসোর্ট তৈরি করতে যাচ্ছে সৌদি আরব।
নারীদের পোশাকের বিষয়ে বিশেষভাবে কট্টর মুসলিম দেশটি এসব পর্যটনকেন্দ্রে বিকিনি পরার সুযোগ করে দেবে বলে দ্য টেলিগ্রাফ জানিয়েছে।
লন্ডনভিত্তিক সংবাদমাধ্যমটির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, সৌদি আরবের নতুন যুবরাজ বিচ রিসোর্টের পরিকল্পনা ঘোষণা করেছেন। সেখানে নারীদের বিকিনি পরার সুযোগ দিতে বিশেষ আইন প্রণয়ন করা হবে।
তেলের উপর নির্ভরতা কমিয়ে পর্যটন থেকে আয় বাড়াতে নতুন যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান মঙ্গলবার ‘রেড সি প্রজেক্ট’ শীর্ষক বিশাল পরিকল্পনার কথা ঘোষণা করেন।
এই পরিকল্পনার কথা জানিয়ে সৌদি সরকারের যে বিবৃতি দেওয়া হয়েছে, তাতে পর্যটনের বৈশ্বিক মান বজায় রাখার কথা বলা হলেও সরাসরি বিকিনি পরার সুযোগ দেওয়া বা পোশাক-পরিচ্ছদ বিধি নিয়ে নিয়ে কিছু বলা হয়নি।
তবে টেলিগ্রাফ বলছে, “এসব পর্যটনকেন্দ্রের জন্য বিশেষ আইন করা হবে, যাতে সারা শরীর ঢেকে রাখার পরিবর্তে নারীদের বিকিনি পরার সুযোগ থাকবে।”
সমুদ্র সৈকতে বোরকা পরা বাধ্যতামূলক থাকলে পর্যটকরা মুখ ফিরিয়ে নেবে বলে সৌদি রাজতন্ত্র রিসোর্টের আন্তর্জাতিক মানের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে বিশেষ আইন তৈরির মাধ্যমে এসব রিসোর্ট পরিচালনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে ব্রিটিশ দৈনিকটি বলছে।
নারী বিষয়ে সৌদি আরবের আইন-কানুন বিশ্বে সবচেয়ে রক্ষণশীল। নারীদের গাড়ি চালানোয় নিষেধাজ্ঞা ও সঙ্গে পুরুষ নিয়ে ঘর থেকে বের হওয়ার বিধান অন্যতম। উপরন্তু ঘরের বাইরে নারীদের মাথায় স্কার্ফের সঙ্গে পুরো শরীর ঢাকতে হয়।
গত মাসেই পরিত্যক্ত একটি গ্রামে মিনি স্কার্ট পরে ছবি তোলার অপরাধে এক তরুণীকে গ্রেফতার করা হয়।
মুসলমানদের পবিত্র ভূমি হিসেবে পরিচিত মক্কা ও মদিনায় প্রতি বছর হজ ও কাজের সূত্রে লাখ লাখ পর্যটক সৌদি আরব গেলেও কট্টর সামাজিক ও ধর্মীয় নিয়মকানুন সাধারণভাবে দেশটি পর্যটকদের আকর্ষণ করতে পারেনি বলে বিবিসি বলছে।
তাদের প্রতিবেদনে বলা হয়, তেলের দাম কমায় নতুন আয়ের পথ এবং সৌদি নাগরিকদের জন্য চাকরির যোগান দিতে দ্রুত উদ্যোগ নিতে হচ্ছে সৌদি আরবকে। এক্ষেত্রে দেশটির অর্থনৈতিক ও সামাজিক খাতে নতুন দর্শনের গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হয়ে এসেছে পর্যটন খাত।
পর্যটনের উন্নয়নে বৃহৎ এই প্রকল্পের অধীনে ২০২২ সালের মধ্যে সৌদি আরবের শহর আমলাজ ও আল-জাওয়াহের মধ্যবর্তী লোহিত সাগরের উপকূলঘেঁষে প্রায় ৫০টি দ্বীপে রিসোর্ট তৈরি করা হবে।
সেখানে প্রাকৃতিক বৈচিত্র্য উপভোগ, কোরাল রিফে ডাইভিং ও ঐতিহাসিক স্থানগুলো পরিদর্শনের সুযোগ থাকবে।
২০১৯ সালের মধ্যে কাজ শুরু করে প্রথম ধাপে বিমানবন্দরের উন্নয়ন, বিলাসবহুল হোটেল ও আবাসন নির্মাণের কাজ শেষ করবে।
টেলিগ্রাফ বলছে, বিশ্ব বাজারে তেলের দাম পড়ে যাওয়ার পর অর্থনীতিতে বৈচিত্র্য এনে আয়ের পথ বাড়াতে চায় সৌদি আরব। এসব পর্যটন এলাকায় বিদেশিদের জন্য ভিসা ব্যবস্থার পাশাপাশি বিধি-বিধান শিথিল করা হবে।
সৌদি আরবে মদ, সিনেমা ও থিয়েটারে রয়েছে নিষেধাজ্ঞা।
No comments:
Post a Comment