নানা সমস্যা নিয়ে ছুটে আসা উঠতি বয়সী মেয়েদের কথার জাদুর ফাঁদে ফেলে যৌন সম্পর্ক গড়ে তুলতেন তিনি। গোপনে সে দৃশ্য ভিডিও করতেন। পরে ওই ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেয়ার ভয় দেখিয়ে আদায় করতেন মোটা অংকের টাকা।
প্রতারণার শিকার রাজধানীর উত্তরার বাসিন্দা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া এক ছাত্রী যুগান্তরকে বলেছেন, আহসান হাবিবের ইউটিউবে এইচপি নামে একটি চ্যানেল রয়েছে। ওই চ্যানেলে মাঝেমধ্যেই ছদ্মনামে হাজির হতেন তিনি। কথার জাদুতে আকৃষ্ট হয়ে ওই তরুণী তার খপ্পরে পড়েন। এক পর্যায়ে হাবিব ওই তরুণীর সঙ্গে যৌন সম্পর্ক গড়ে তোলেন। সে দৃশ্য ভিডিও করে পরবর্তীতে তরুণীর কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেয়।
প্রায় ৬ মাস আগে ওই ঘটনায় অভিযোগ দায়েরের পর কাউন্টার টেরোরিজমের সাইবার ক্রাইম ইউনিট মঙ্গলবার গভীর রাতে হাবিবকে গ্রেফতার করে।
এদিকে ভিডিও ধারণ করে প্রতারণার অভিযোগে গ্রেফতার ‘ভণ্ডপীর’কে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দু’দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনের মামলায় ‘ভণ্ডপীর’কে বৃহস্পতিবার ঢাকার মহানগর হাকিম মাঈন উদ্দিন সিদ্দিকীর আদালতে হাজির করে ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়।
শুনানি শেষে আদালত দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
সিটিটিসির অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) মো. নাজমুল ইসলাম জানান, খিলগাঁও থেকে গ্রেফতারের পর ভণ্ডপীরের কম্পিউটার থেকে এ ধরনের ২০টি ভিডিও ক্লিপ উদ্ধার করা হয়েছে।
একই সঙ্গে বিভিন্ন ব্যাংক অ্যাকাউন্টের চেক বই উদ্ধার করেছে পুলিশ। এসব অ্যাকাউন্টে কয়েক লাখ টাকা জমা রয়েছে।
পুলিশ কর্মকর্তা মো. নাজমুল ইসলাম বলেছেন, এই ভণ্ডপীর দাওরায়ে হাদিসের শিক্ষার্থী। ইউটিউবে তার নিজের চ্যানেলের মাধ্যমেই তিনি প্রতারণা করে আসছিলেন। সেখানে ধর্মের কথা বলে অল্প দিনেই বেশ জনপ্রিয়তা পেয়ে যান তিনি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও ধর্মের কথা বলে অনেক অনুসারী তৈরি করেছে এই প্রতারক।
নিজেকে পীর দাবি করে জিন তাড়ানোসহ বিভিন্ন সমস্যার সমাধান দেয়ার কথা বলে মেয়েদের বশে আনতেন তিনি। মেয়েদের সঙ্গে ইমো ও ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে নানা কায়দায় তরুণীদের বাসায় এনে যৌন সম্পর্ক স্থাপন করতেন এ প্রতারক।
নাজমুল ইসলাম জানান, প্রাথমিক তদন্তে এর সত্যতা পাওয়া যায়। তদন্ত কর্মকর্তা সাত দিনের রিমান্ড চাইলে শুনানি শেষে ঢাকা মুখ্য মহানগর হাকিম মাঈন উদ্দিন সিদ্দিকী দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
No comments:
Post a Comment