বাহরাইন বাংলাদেশ দূতাবাসের তথ্যমতে, বর্তমানে বাহরাইনে প্রায় এক লাখ বৈধ বাংলাদেশি শ্রমিক রয়েছে। আর অবৈধ শ্রমিকদের সুনির্দিষ্ট কোন হিসেব নেই ।
জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমটি) তথ্যমতে,২০১১ সালে বাহরাইনে শ্রমিক রফতানি হয় ১৩ হাজার ৯৯৬ জন,২০১২ সালে ২১ হাজার ৭৭৭ জন,২০১৩ সালে ২৫ হাজার ১৫৫ জন এবং এ বছর তা ২৫ হাজার ছাড়িয়ে গিয়েছে। পাশাপাশি বাহরাইনের জনশক্তি আমদানি বিষয়ক সর্বোচ্চ সরকারি প্রতিষ্ঠান লেবার মার্কেট রেগুলেটরি অথরিটির (এলএমআরএ) তথ্য মতে বাহরাইনে বর্তমানে কর্মরত প্রায় ছয় লাখ বিদেশি কর্মীর মধ্যে এক লাখ বাংলাদেশি কর্মী । সবচেয়ে বেশি বিদেশি কর্মী রয়েছে ভারতের (৫৫ শতাংশ)।
বাহরাইন প্রবাসী বাংলাদেশি ব্যবসায়ী আলাউদ্দিন আহমেদ জানান, দেশটিতে বাংলাদেশি কর্মীর সংখ্যা ১৬ শতাংশ। এসব কর্মীর সিংহভাগ নির্মাণ খাতে কাজ করেন। নির্মাণ খাত ছাড়াও কাঠমিস্ত্রি, মুদি দোকান, দর্জি দোকান, হেয়ার ড্রেসিং শপ, ট্রলারে করে মৎস্য শিকার, রেস্তোরাঁয় শেফ ও কুক, কৃষি ও বনায়ন খাতে বাংলাদেশিরা কর্মরত রয়েছেন। তবে বাহরাইনে বাংলাদেশি কর্মীদের ৮০ শতাংশ কর্মীই নির্মাণ খাতে কাজ করে।
এই প্রবাসী ব্যবসায়ী জানান, নির্মাণ শ্রমিকেরা ঘন্টা চুক্তিতে কাজ করে। একজন নির্মাণ লেবার প্রতি ঘন্টায় ১৩০ টাকা, দক্ষ কার্পেন্টার হলে সেক্ষেত্রে প্রতি ঘন্টায় সর্বোচ্চ ১৮০ টাকা, এ্যালুমিনিয়ামে ওয়াল্ডিং কর্মীরা সর্বোচ্চ ঘন্টায় ২০০-২২০ টাকা আয় করতে পারে।
আলাউদ্দিন বলেন, বেশি টাকা আয় করতে গিয়ে অনেক ক্ষেত্রে শ্রমিকেরা ১৪/১৫ ঘন্টা কিংবা ১৮ ঘন্টা কাজ করছে। এর ফলে দ্রুত বার্ধক্যসহ নানা শারিরীক জটিলতায় ভোগে তারা। দ্রুত কর্মক্ষমতা হারানোর সংখ্যা তাই নির্মাণ শ্রমিকদের মধ্যেই বেশি।
আলাউদ্দিন জানান, জনশক্তি রফতানিকারকরা বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা সম্পন্ন কাজের কথা বলে বাহরাইনে শ্রমিক পাঠালেও সেখানে গিয়ে কাঙ্ক্ষিত ভালো কাজ মেলে না। তখন তাদেরকে প্রখর রোদে পুড়ে নির্মাণ খাতে কাজ করা ছাড়া অন্য কোন উপায় থাকে না। ফলে নির্মাণ খাতে অবাধে বেড়ে চলেছে বাংলাদেশি শ্রমিকের সংখ্যা।
বিশ্লেষকরা বলছেন, বাংলাদেশের একশ্রেণির রিক্রুটিং এজেন্সি বাহরাইনে তাদের নিজস্ব দালাল নিয়োগ করে ভিসা কেনে। এরা বিভিন্ন রকম প্রলোভন দেখিয়ে উচ্চমূল্যে ভিসা বিক্রি করে। ফলে সর্বশান্ত হয়ে বাহরাইন এয়ারপোর্ট থেকে ভুক্তভোগীরা আর দেশে ফিরতে চায় না।
No comments:
Post a Comment