ট্রাম্প, পুরো নাম ডোনাল্ড জন ট্রাম্প। ব্যবসায়ী ও টিভি ব্যক্তিত্ব। যুক্তরাষ্ট্রের কট্টরপন্থী রিপাবলিকান দলের নেতা। ২০১৬ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে দলটির সম্ভাব্য প্রার্থী।
এটা তার এক পরিচয়। অন্যদিকে গোটা মুসলিম বিশ্ব তাকে চেনে 'মাথা মোটা' হিসেবে। ইসলাম ও মুসলিম নিয়ে তার বক্তব্যে গোটা দুনিয়া বিরক্ত। নিজ দলের নেতারাও 'গাড়ল' উপাধি দিতে পারলে খুশি হন।
অথচ সেই মোটা মাথার 'ক্যারিশমা' দেখেই নাকি নিজের চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ বয়সী ডোনাল্ড ট্রাম্পের (৫২) প্রেমে পড়েছিলেন মেলানিয়া নাউস (২৮)।
সেটি ১৯৯৮ সালের নভেম্বর। ৫২-এর বৃদ্ধ ট্রাম্প অন্য মেয়ের সঙ্গে চুটিয়ে প্রেম করছেন। নিউইয়র্কের কিট ক্যাট ক্লাবের এক পার্টিতে এক মেয়েকে নিজের বগল দাবা করে হাজির মডেল মেলানিয়ার সামনে। বলে বসেন, মেলানিয়াকে তার ভালো লেগেছে এবং যোগাযোগ করার জন্য নম্বর চান।
তৃতীয় স্ত্রী মেলানিয়ার সঙ্গে ট্রাম্পতবে মেলানিয়া তা দিতে অস্বীকৃতি জানান। নিজেই অবশ্য ট্রাম্পের নম্বর চেয়ে নেন। শিকার ধরতে ওস্তাদ ট্রাম্পও দেরি করেননি। তার সব নম্বর মেলানিয়াকে দেন। দু'সপ্তাহ পরই মেলানিয়ার কাঙ্ক্ষিত কল পান ট্রাম্প। প্রথম আলাপেই দু'জনের কাছে আসতে খুব বেশি সময় লাগেনি। দ্রুতই তারা ডেটিংয়ে যান।
এরপর মন দেয়া-নেয়া চলে আরও কয়েক বছর। তখনও অবশ্য ট্রাম্প তার দ্বিতীয় স্ত্রী মারলা ম্যাপলসকে তালাক দেননি। ১৯৯৩ সালে তাদের বিয়ে হয়, ১৯৯৭ সাল থেকে দু'জনে আলাদা থাকা শুরু করেন। অবশেষে মেলানিয়ার পথ পরিষ্কারে ১৯৯৯ সালে ম্যাপলসকে তালাক দেন ট্রাম্প। এর আগে প্রথম স্ত্রী ইভানা ট্রাম্পের সঙ্গে ১৯৯০ সালে তার বিচ্ছেদ হয়।
মেলানিয়ার সঙ্গে জমিয়ে চলা প্রেমের পরিণতি হয় ২০০৫ সালের জানুয়ারিতে। তরুণী মেলানিয়া বিয়ে করেন চার সন্তানের জনক ট্রাম্পকে।
ইউএস উইকলিকে দেয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে মেলানিয়া তাদের এই প্রেম ও বিয়ের গল্প বলেছেন। স্বামী ট্রাম্পকে দারুণ 'রসিক' আখ্যায়িত করেছেন তিনি।
মেলানিয়া বলেন, 'ট্রাম্প যতক্ষণ আমার সঙ্গে সময় কাটায়, ততক্ষণই রোমান্টিক মুডে থাকে। সে স্বামী হিসেবে অসাধারণ এবং আমরা দারুণ সম্পর্ক উপভোগ করছি।'
তিনি বলেন, 'আমার কাছে তার মস্তিষ্ক সবচেয়ে প্রিয়। পছন্দ করি তার আকর্ষণীয় ভঙ্গিতে তাকানো। এক কথায় তার সবকিছু অসাধারণভাবে আমার সঙ্গে মিলে যায়।'
মডেল মেলানিয়া ২৮ বছর বয়সে চার সন্তানের জনক ট্রাম্পের প্রেমে পড়েনমেলানিয়া ট্রাম্পের রাজনৈতিক জীবন নিয়েও কথা বলেছেন। তিনি ট্রাম্পের সব কর্মকাণ্ডকে এক বাক্যে সমর্থন দিয়েছেন। তবে ৯ বছরের ছেলে ব্যারনের কথা ভেবে স্বামীর সঙ্গে কোনো নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নেন না তিনি।
মেলানিয়া বলেন, 'আমি খুবই রাজনীতিপ্রবণ মানুষ। তবে সেটি জনসম্মুখে নয়, ঘরে। রাজনীতি নিয়ে তার অনেক বক্তব্যে আমি দ্বিমত পোষণ করি এবং বাসায় তাকে সেটি সরাসরি বলি।'
২৫ বছরের বড় কারও প্রতি নিজের আকর্ষণ অনুভবের বিষয়ে সাবেক মডেল মেলানিয়া জানান, ১৯৯৮ সাল থেকে প্রেম করে ২০০৪ সালে কসটিউম ইনস্টিটিউটের গালা নাইটে ট্রাম্প তাকে বিয়ের প্রস্তাব দেন। এরপর সেখান থেকে এক সঙ্গে বের হয়ে তারা মেলানিয়ার বাসায় যান।
ছেলে ব্যারন ও তৃতীয় স্ত্রী মেলানিয়ার সঙ্গে ট্রাম্পপরের বছরের জানুয়ারিতে ট্রাম্পের সঙ্গে মেলানিয়ার বিয়ে হয়। সাক্ষাৎকারে মেলানিয়া তার পরিবারের ধর্মের বিষয়েও কথা বলেছেন। তিনি জানান, আমরা পরিবার প্রথায় গভীর বিশ্বাস করি এবং আমরা খ্রিস্টান।
মেলানিয়া বলেন, 'আমি স্লোভেনিয়ার ব্যাপটিস্ট খ্রিস্টান। আর আমাদের ছেলে ব্যারন নিয়মিত চার্চে যায়।'
তিনি জানান, স্বামীর আগের স্ত্রীর চার সন্তান (সৎ)- ডোনাল্ড জুনিয়র (৩৮), ইভানকা (৩৪), এরিক (৩২) ও টিফানির (২২) সঙ্গে তার দারুণ সম্পর্ক। তারা খুব দারুণভাবে বেড়ে উঠছে।
মেলানিয়া বলেন, 'আমি নিজেকে তাদের মা নয়, বন্ধু মনে করি। তারা কিছু প্রয়োজন মনে করলেই আমাকে পাই।' তবে ট্রাম্পের অন্য স্ত্রীদের সঙ্গে মেলানিয়ার কোনো সাক্ষাৎ হয়নি বলেও জানান।
Monday, March 14, 2016
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment