সৌদি আরব এবং কাতার মধ্যপ্রাচ্যের এই দুটি দেশেই বহু বাংলাদেশি শ্রমিক রয়েছে, যাদের পাঠানো অর্থে গতিশীল দেশের অর্থনীতি। সবচেয়ে বেশি বাংলাদেশি কর্মী রয়েছে সৌদি আরবে; বিশ্বকাপ আয়োজন ঘিরে কাতারে বাংলাদেশের শ্রমবাজারও বড় হচ্ছে। কাতারে প্রায় ৪ লাখ বাংলাদেশি রয়েছে। আবার সৌদি বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় শ্রম বাজার. তাই কাতারে বাংলাদেশি কমিউনিটি চলমান সৌদি-কাতার দ্বন্দ্বে কোন বিষয়েই কথ বলতে চাচ্ছে না। এক প্রকার চুপ করে দেখে যা্ওয়া ছাড়া তাদের আর তেমন কিছুই করার নেই।
কাতার প্রবাসী সাংবাদিক কাজী শামীম। প্রায় এক যুগ ধরে বসবাস করছেন কাতারে। সৌদি কাতার দ্বন্দ্বের সাম্প্রতিক বিষয় নিয়ে ভয়েস বাংলা সঙ্গে কথা হয় তার। তিনি জানান’ ‘বেশ কিছুদিন আগে একজন মিশরিয়’র সঙ্গে আমার কথা হয়। তিনি বলেন সৌদি-কাতার দ্বন্দ্ব মধ্যপ্রাচ্যে তেমন কোন সমস্যার সৃষ্টি করবে না। এটা মান অভিমানের ব্যাপার ঠিক হয়ে যাবে। এই ভাবনা টা অনেকের মধ্যেই ছিল। কিন্তু বাংলাদেশিদের এ ধরণের ভাবনায় এখন চির ধরেছে।’ তাছাড়া স্থানীয় কাতারীদের ভাবনাটা ছিল অনেকটা এরকম, কাতারে যেভাবে অর্থনৈতিক উন্নয়ন ঘটছে তা ভালো চোখে দেখছে না সৌদি, বাহরাইন, আরব আমিরাত। কাতারে বাংলাদেশিরা আসলে কেমন আছেন? সৌদি-কাতার দ্বন্দ্বে তাদের কর্মক্ষেত্রে কী কোন প্রভাবই পড়েনি? যদিও এ বিষয় নিয়ে অধিকাংশই সরাসরি কথা বলতে রাজি হন না। সৌদি-কাতার দ্বন্দ্ব নিয়ে কথা হয় কাতারের একটি বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানে কাজ করা এক বাংলাদেশির সঙ্গে।
তিনি নাম প্রকাশ না করার শর্তে কথা বলেন ভয়েস বাংলার সঙ্গে। তিনি বলেন‘ কাতারে অনেকেই বেকার হয়ে পড়েছে। কেউ কেউ দেশ থেকে টাকা নিয়ে আসছে।মূলত এই সমস্যায় পড়ছে যারা ফ্রি ভিসার নামে এসেছিল। তারা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ধরণের কাজ করত। এখন এরা পুলিশের হাতেও ধরা পড়ছে। তাছাড়া প্রবাসীরা অনেকেই বাংলাদেশি মালিকানায় কাজ করত। কন্সটাকশনের কাজের জন্য সিমেন্ট সহ যে ধরণের উপাদান দরকার তা দুবাই থেকে আসছে না। এ কারণে কিছু কিছিু কাজ বন্ধ আছে। ফলে সাময়িক ভাবে কেউ কেউ বেকার হয়ে পড়েছে।’ প্রবাসী সাংবাদিক কাজী শামীম জানান, ‘কাতারের বাংলাদেশি ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন আরব আমিরাতের সঙ্গে সম্পর্ক স্বভাবিক হতে দেরি হলেও চীনের সঙ্গে ব্যবসায়ীক সম্পর্ক বাড়বে। তাহলে সহসায় সমস্যা কেটে যাবে বলে তারা আশা করেন ‘ তবে এ কথাও সত্য সৌদি- কাতার দ্বন্দ্বের পেছনে রয়েছে আন্তর্জাতিক ইস্যু। ফলে খুব সহজে এ সমস্যা সমাধান হবে এমনটাও অনেকেই মনে করেন না। যেটা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের বক্তব্য থেকে পরিস্কার হয়েছে। ট্রাম্প সৌদির সঙ্গে যেমন বাণিজ্য করছে, তেমনি কাতারে অস্ত্রও বিক্রি করছে।
তবে বাংলাদেশিরা নানাবিধ কারণে এখন সৌদি, কুয়েত, বাহরাইনমুখী হয়েছে। এর প্রমাণ পাওয়া যায় বেশ কিছুদিন আগে একটি ফ্রি ভিসায় কাতার যেতে ৬থেকে ৭ লাখ টাকা লাগত যা এখন ৪ থেকে ৫ লাখে নেমে এসেছে। আর সৌদি-কাতার দ্বন্দ্বে শ্রমিক যাওয়া একেবারে বন্ধ হয়ে গেছে যেমন সত্য না, তেমনি এ কথাও সত্য যে, যারা আছে তারা অনেকেই বেকার অবস্থায় দিন কাটাচ্ছে। আর এই সংখ্যা দিনকে দিন বাড়ছে কাতারে।
No comments:
Post a Comment