Social Icons

Tuesday, August 22, 2017

আমিরাতের শ্রমবাজার বন্ধের পাঁচ বছর, কাটছেনা জটিলতা


মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের অন্যতম শ্রমবাজার ছিলো সংযুক্ত আরব আমিরাত । কিন্তু ২০১২ সালে ১২ আগস্ট নিরাপত্তার অজুহাত দেখিয়ে বাংলাদেশি কর্মীদের ভিসা দেয়া বন্ধ করে দেয় দেশটি। পরে ২০১৩ সালে ওয়ার্ল্ড এক্সপো-২০২০ নির্বাচনের সময় বাংলাদেশ দুবাইকে প্রথম দফায় ভোট না দেয়ার আরো জটিল হয়ে পড়ে আমিরাতের ভিসা। এ দেশটি ভিসা বন্ধের পাঁচ বছর হয়ে আসলো কিন্তু এখনো এর সঠিক কোন সমাধানে পৌছাতে পারেনি বাংলাদেশ। যদিও প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রী নূরুল ইসলাম বিএসসি কয়েকমাস আগে আমিরাত সফর শেষে জানান, আগামী বছর থেকে আবারও চালু হতে পারে আমিরাতের ভিসা প্রক্রিয়া।
কিন্তু এ প্রক্রিয়ার এখনো কোনো ধরনের কাযক্রম চালু হয়নি। এ কারণে মধ্যপ্রাচ্যের একটি বড় শ্রমবাজার ক্রমান্বয়ে হারিয়ে ফেলছে বাংলাদেশ। আমিরাতে দীর্ঘদিন ধরে চাকরি করা জাহাঙ্গীর কবির বাপ্পি বলেন, সেখানকার শ্রম মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে ভিসা বন্ধ থাকলেও এতোদিন অভিবাসন মন্ত্রণালয়ের ‘পার্টনার’ ভিসা খোলা ছিল। কিন্তু এখন আজমান ছাড়া বাকি সব প্রদেশে প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে পার্টনার ভিসাও। তবে একটি পার্টনার ভিসা করতে বাংলাদেশের ৮-১০ লাখ টাকা খরচ হয়ে যাচ্ছে প্রবাসীদের। কিন্তু এ ভিসায় এসেও ভালো কাজ পাচ্ছে না বাংলাদেশিরা। যার কারণে দিনের পর দিন বাড়ছে প্রবাসীদের কষ্ট আর হাহাকারের চিত্র। তিনি অভিযোগ করেন, ‘অন্যদেশের লোকেরা বাংলাদেশিদের চেয়ে বেশি অপরাধে জড়িত। কিন্তু স্রেফ বাংলাদেশিরা অপরাধে জড়িত অভিযোগের প্রতিবাদ না করে নিজের দায় এড়াতে চেয়েছে বাংলাদেশ সরকার। আসলে কূটনৈতিক কারণেই ভিসা খুলছে না। বলেও মনে করেন বাপ্পি’ ।
শারজাহের নির্মাণশ্রমিক মাসুদ আহমদ বলেন, “বাংলাদেশিদের ভিসা বন্ধ থাকায় এখানকার সব কোম্পানি বাংলাদেশিদের দূর্বলতার সুযোগ নিয়ে আমাদের নানা ভাবে সমস্যার মধ্যে ফেলে দিচ্ছে। তিনি বলেন, অন্যদেশের কর্মীদের বেতন বাড়ালেও আমাদের বাড়ায় না। কোন বাংলাদেশি বেতন বাড়াতে বললে আমিরাত ছেড়ে চলে যাওয়ার হুমকি দেয়। যে টাকা খরচ করে তারা আমিরাতে আসছে এই টাকা না আয় করে দেশেও ফেরত যেতে পারে না বাংলাদেশিরা যার সুযোগ নেয় আমিরাতের বিভিন্ন কোম্পানিগুলো। মাসুদ আহমেদের বন্ধু রকিব বলেন, “সরকারের কাছে অনুরোধ নতুন ভিসা খোলার দরকার নেই। আমরা যারা এখানে আছি তাদের কথা ভেবে অন্তত ভিসা ট্যান্সফারের ব্যবস্থা করা হোক। শুধু এইটুকুই নয়, এখানকার স্থানীয় গণমাধ্যমেও আছে বাংলাদেশিদের নিয়ে বৈষম্য।
তিনি বলেন, পাকিস্তানি, ভারতীয় কেউ অপরাধ করলে শিরোনাম হয় ‘এশিয়ান গ্রেপ্তার’ কিন্তু এখানে বাংলাদেশি কেউ গ্রেপ্তার হলে ‘বাংলাদেশি গ্রেপ্তার’ শিরোনাম হয়। তিনি বলেন, আমাদের দেশে শ্রমিকরা অন্যায় অত্যাচার মেনে নিয়ে কাজ করতে বাধ্য হচ্ছে। যার কারণে ভিসা প্রক্রিয়াসহ ভিসার যাবতীয় কাযক্রম বন্ধ রেখেছে আমিরাত সরকার। রকিব বলেন, নতুন করে ভিসা চালু হওয়া অবশ্যই একটা ভালো খবর। কিন্তু এর চেয়ে বেশি প্রয়োজন যেসকল প্রবাসীরা এখন আমিরাতে রয়েছে তাদের বিষয়ে সঠিক ব্যবস্থা নেওয়া। কারণ যদি ভিসা নাবায়ন, ট্রান্সপারের মতো সমস্যা গুলো দূর করতে পারে তাহলে অন্যান্য দেশের থেকেও ভালো অবস্থানে থাকবে বাংলাদেশিরা। তিনি বলেন, আমাদের দূতাবাসে এম আর পি ব্যবস্থা নেই যার কারণে আমাদের ভিসা নবায়নের জন্য অতিরিক্ত অর্থ গুনতে হচ্ছে। এই বিষয়গুলোর সঠিক সমাধানের প্রয়োজন বলেও মনে করেন তিনি। দেশের রেমিটেন্স খাতে সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রবাসীরা একসময় শীর্ষে ছিলেন। কিন্তু ভিসা জটিলতায় শ্রমবাজারের সাথে সাথে রেমিটেন্স হারাচ্ছে বাংলাদেশ। এ ব্যাপারে কূটনৈতিক উদ্যোগ জোর না হলে শ্রমবাজার চিরতরে বন্ধ হয়ে যেতে পারে আমিরাতে। যা আমাদের রেমিটেন্সে বিরাট প্রভাব ফেলবে বলেও মনে করেন অনেক বিশেষজ্ঞ।

No comments:

Post a Comment

 

© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত । এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি

সম্পাদকীয় কার্যলয়

Rua padre germano mayar, cristo rio -80040-170 Curitiba, Brazil. Contact: +55 41 30583822 email: worldnewsbbr@gmail.com Website: http://worldnewsbbr.blogspot.com.br

সম্পাদক ও প্রকাশক

Jahangir Alom
Email- worldnewsbb2@gmail.com
worldnewsbbbrazil@gmail.com
 
Blogger Templates