Social Icons

Thursday, August 17, 2017

কুয়েতে অর্থনৈতিক মন্দায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্থ বাংলাদেশিরা


আরব সাগরের কোল ঘেঁষে বিকশিত মধ্যপ্রাচ্যের অন্যতম ধনী দেশ কুয়েত। শ্রমিক নিয়োগে নিষেধাজ্ঞা না উঠলেও বিশেষ অনুমতি নিয়ে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে বাংলাদেশি শ্রমিকরা কুয়েত যাচ্ছে। উপসাগরীয় যুদ্ধের পর থেকে ২০০৬ সাল পযর্ন্ত ভিসা উন্মুক্ত ছিলো বাংলাদেশিদের। তবে কিছু উচ্ছৃঙ্খল প্রবাসী বাংলাদেশির নানা অপরাধ এবং ভারতীয়দের বাংলাদেশি বিরোধী প্রচারণার কারণে মূলত বাংলাদেশের ভিসা বন্ধ হয়ে যায় কুয়েতে। তবে আবার ২০১৪ সালে বিশেষ সুপারিশে লা‘মানা নামাক নতুন ভিসায় কাজ করার সুযোগ পায় বাংলাদেশিরা। কিন্তু অর্থনৈতিক মন্দায় বর্তমানে কুয়েতের ছোট বড় ব্যবসায় খারাপ সময় যাচ্ছে। শুধু ছোট ছোট দোকান বা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান নয়, বড় এবং সুপরিচিত দোকানও বন্ধ হয়ে যাচ্ছে কুয়েতে। ফলে এটা গ্রাহকদের বেশি হতাশায় ফেলেছে, বিশেষ করে যারা ঐসব দোকানে বহু বছর ধরে কেনাকাটা করতে পছন্দ করত তাদেরকেই অনেকটা বিপাকে ফেলছে। আর এ অবস্থায় সবচেয়ে বিপদে পড়ছে বাংলাদেশি ব্যবসায়ীরা।
কারণ বাংলাদেশিদের কুয়েত ভিসা পেতে প্রায় ৭-৮ লাখ টাকা খরচ পরে। এতো টাকা খরচ করে কুয়েতে এসে ব্যবসা-বাণিজ্যের এমন দূরাস্থায় হতাশায় দিন কাটাচ্ছে প্রবাসীরা। প্রবাসী বাংলাদেশি ব্যবসায়ী ফয়সাল আহমেদ। তার কুয়েতে একটি ছোট দোকান রয়েছে। তিনি জানান, এ্যভিন্যূ মলে বিগত কয়েক মাসে বিশেষত ফ্যাশন ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান এবং এর সাথে সম্পর্কিত ছোট-খাট কোম্পানিগুলো বন্ধ হয়ে পড়েছে। তিনি বলেন, এই শপিং মলে একটি কোম্পানিরই পাঁচটি দোকান বন্ধ রয়েছে অনেকদিন ধরে। এই সংকটের কারণে অনেক কর্মচারী তাদের চাকরি হারিয়েছে।
ফয়সাল আহমেদ বলেন, কুয়েতে বৈধ ভিসায় কোনো প্রবাসী কাজের সুয়োগ পায় না। এ কারণে অবৈধ ভিসায় কুয়েতের ছোট-বড় শপিং মলে কাজ করেন তারা। কিন্তু বেশিরভাগ শপিং মলে দোকানগুলো বন্ধ হয়ে যাওয়ায় অনেক প্রবাসী চাকরী হারাচ্ছে। ফয়সাল বলেন, প্রবাসীরা প্রচুর টাকা খরচ করে কুয়েতে আসছে। যার কারণে বেকার হয়ে যাওয়ার পরও দেশে ফেরত যেতে পারছে না তারা। তিনি আরও বলেন, অনেক প্রবাসী যে ঋণ করে কুয়েতে কাজের উদ্দেশ্যে এসেছে তাদের ঋণের টাকাও এখনো শোধ করতে পারেনি। এতে কুয়েতে অবস্থিত অনেক বাংলাদেশিরা হতাশার মধ্যে দিন পার করছে।
কুয়েতে অনলাইন ব্যবসা এবং সোশ্যাল মিডিয়া এখন ছোট ব্যবসা প্রতিষ্ঠাগুলিকে মারাত্মক প্রতিযোগিতার মুখে ফেলেছে। এমন অনেক মানুষ আছেন যারা কেনাকাটা করার জন্য বাজারে যেতে পছন্দ করেন না। তাদের কাছে বরং অনলাইনে কেনাকাটা করা সহজ। ইনস্টাগ্রাম এবং অন্যান্য অ্যাপ্লিকেশনের মাধ্যমে হোম ব্যবসা চালানোর কারণে বিক্রেতাদের বর্তমানে ব্যয়বহুল মাসিক ভাড়া এবং বেশি সংখ্যক কর্মচারীদের বেতন পরিশোধ করতে হয় না। ফলে তারা ক্রেতাদের কাছে আরও স্বল্প মূল্যে পণ্য বিক্রি করতে পারে। আর এই কারণে ছোট খাট ব্যবসাগুলো প্রায় বন্ধ হয়ে পড়েছে কুয়েতে। ফয়সাল বলেন, বাংলাদেশি প্রবাসীরা বেশিরভাগ ছোট খাট ব্যবসার সাথে জড়িত। আর এ ধরনের ব্যবসাগুলো অনলাইনের মাধ্যমে করা সম্ভব নয়। এতে সমস্যায় পড়ছে প্রবাসী ব্যবসায়ীরা।
ফয়সাল বলেন, অর্থনৈতিক মন্দার কারণে কুয়েতে এ সমস্যাটা তৈরি হয়েছে। এ বিষয়ে বাংলাদেশ সরকার কোনো ব্যবস্থা নিতে পারবে না। কিন্ত লামানা ভিসার নামে যে দেশিয় দালালরা যেভাবে কুয়েতের প্রবাসীদের স্ববর্স্ব লুটে নিচ্ছে এর একটি সঠিক সমাধান করা সম্ভব বলে মনে করেন তিনি। ফয়সাল বলেন, লামানা ভিসায় নয় বৈধ ভিসা প্রক্রিয়া খুবশিগ্রই চালু করার জন্য বাংলাদেশ সরকারের ব্যবস্থা নেওয়া দরকার। তাহলে কুয়েতে বাংলাদেশিরা অন্যান্য দেশের শ্রমিক থেকে ভালো অবস্থানে থাকবে।

No comments:

Post a Comment

 

© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত । এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি

সম্পাদকীয় কার্যলয়

Rua padre germano mayar, cristo rio -80040-170 Curitiba, Brazil. Contact: +55 41 30583822 email: worldnewsbbr@gmail.com Website: http://worldnewsbbr.blogspot.com.br

সম্পাদক ও প্রকাশক

Jahangir Alom
Email- worldnewsbb2@gmail.com
worldnewsbbbrazil@gmail.com
 
Blogger Templates