একটু পর সালমানের মামা আসলেন। মামাকে সালাম দিয়ে সরাসরি জিজ্ঞেস করলাম-মামা সালমান শাহ চলচ্চিত্র উৎসব করব। মামা কিছু বললেন না। “চল ভেতরটা ঘুরে দেখি”।
আমরা ভেতরে গিয়ে আরও অনেক ছবি দেখলাম। পারিবারিক ছবি। প্রিয় নায়ক এর পৌরষদিপ্ত চেহারা। পুরনো কতো কথা মনে পড়ে গেল। সালমান যেখানে জন্ম নিয়েছেন সেই খাট টা দেখলাম। কক্ষ গুলো ঘুরছি আর মনে মনে গান গাইছি। সালমান শাহ অভিনিত গান। মামা আমাদের একটা কক্ষে নিয়ে বসালেন। একটা ছবির এ্যালবাম বের করলেন। একদম এক্সক্লুসিভ কিছু ছবি।
এ্যলবাম ঘাটতে ঘাটতে হঠাৎ করে এমন কিছু ছবি বেরিয়ে আসল যা দেখে আমরা পুরা থ। সালমানের মৃত্যুটি অস্বাভাবিক ছিল। গলায় দড়ি দিয়ে নাকি সালমান মারা গেছে। বর্তমান প্রজন্মও এ নিয়ে অনেক দ্বিধায় রয়েছে।
সালমান মারা যাওয়ার আগের রাতে ৫ই সেপ্টেম্বর ১৯৯৬, মামাকে ফোন করে বলেছিল-মামা এ বউ কে নিয়ে ঘর করা আমার পক্ষে সম্ভব না। আমি কালই ও কে ডিভোর্স দিব। সেই কাল আজও আসে নি।
সালমান যে দড়ির সাথে ফাঁস দেয়া ছিল সে দড়ির সাথে ফ্যান এ বাঁধা দড়ির মিল নাই।
সালমানের বউ এর সাথে আজিজ মো: ভাই নামক এক পরিচালকের নাকি পরকিয়া ছিল-সালমানের সন্দেহ ছিল। মারা যাওয়ার কয়েক দিন আগেও সে পরিচালকের সাথে সালমানের বউ সামিরাকে ড্যান্স করা নিয়ে হাতাহাতি হয়েছে।
সালমানের পাশের ফ্ল্যাটে থাকা বাসিন্দারা সে রাতে ধস্তাধস্তির শব্দ শুনতে পেয়েছিল বলে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছিল।
সালমানের ড্রেসিং রুম যেখানে সালমানের লাশ পাওয়া গিয়েছিল তার পাশে বড় একটা মই রাখা ছিল। লাশ নামাতে এতো তারাতারি উচু ফ্ল্যটে কিভাবে একটা বড় মই ম্যানেজ করা সম্ভব- সেটাও রহস্যজনক।
সালমান যে ব্র্যান্ডের সিগারেট খেত, সালমানের মৃত্যুর ঐ রুমে ঐ দিন অন্য ব্র্যান্ডের সিগারেট পাওয়া গেছে।
সালমানের মৃত্যুর পর খুব তাড়াতারি তাকে দাফন করার ব্যবস্থা হয়েছে। মনে হয়েছিল সবই পরিকল্পিত। দাফণের সময় তার বউ সামিরাকে ঢাকা থেকে সিলেটে আসতে দেয়া হয় নাই।কেন??
কবর থেকে লাশ উঠিয়ে সালমানের যিনি রি-পোষ্টমর্টেম করেছেন। তিনি তার এক দুসম্পরর্কের আত্মীয়ের কাছে বলেছেন-সালমানকে খুন করা হয়েছে। কিন্তু আমি যদি সে কথা প্রকাশ করতাম, আমার দুইটা মেয়েকে ওরা মেরে ফেলত।
এই ওরা কারা?
ডিবি পুলিশের তোলা ছবি গুলো আমাদের তুলতে দেন নাই মামা। না হলে আপনাদের দেখাতাম। আমি বাসায় গিয়ে দেখে এসেছি। সাংবাদিক কিংবা অতি উৎসাহী সালমান ভক্তরা গিয়ে দেখে আসতে পারেন।
শুনলাম যাকে ভালবেসে সালমান বিয়ে করেছিল সেই বার্মিজ মেয়ে সামিরার আবার বিয়ে হয়েছে। তিন সন্তানের জননী। খুব সুখেই আছেন উনি। সালমানের মৃত্যু সংবাদ শুনে ঐদিন ২১জন বাংলাদেশী তরুনী আত্মহত্যা করেছিলেন। আর সামিরা…..!!!!
সালমান চলে যাওয়ার পর আমাদের পুরো ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি আজও মাথা তুলে দাঁড়াতে পারে নাই। অথচ এক সময় বলিউডের বাদশাহ শাহরুখ আমাদের ঢালিউডের বাদশাহ সালমানকে সস্ত্রীক দাওয়াত দিয়ে বললেন-দেখ গৌরী উনি বাংলাদেশের ফিল্মের কান্ডারী।
আর এখন বস্তা পঁচা নায়করা ভুরি উচু করে ঠোটে লিপস্টিক দিয়ে ন্যাকা ন্যাকা ডায়লগ মারে। এক সালমান মরেছে। আর কোন সালমানের এখনো জন্ম হয় নাই। আমরা বড় অভাগা।সালমান শাহ এর মৃত্যু রহস্য এখনও অন্ধকারে …
প্রতি বছর ৬সেপ্টেম্বর আসলে আমরা সালমানকে কেউ কেউ স্মরণ করি । তারপর…..থাক আর কিছু এ বিষয়ে লিখতে মন চাইছে না।
এবার আসি আসল কথায়। আমরা কয়েকজন মিলে সালমান শাহ চলচ্চিত্র উৎসব করতে চাই। আগামী ১৬-১৯জুলাই। উৎসব থেকে প্রাপ্ত অর্থ বন্যার্তদের সাহায্যার্থে ব্যায় করব। আপনাদের সকলের সহায়তা জরূরী। সালমানের ভাল প্রিন্টের সিনেমা কোথায় পাব? প্রচারণার জন্য পোষ্টারও দরকার। কোথায় পাই বলুনতো??
আরেকটা কথা বর্তমান তরুন সমাজ অনেকেই সালমানের মৃত্যু নিয়ে বিভ্রান্ততে আছে। কে খুন করেছে জানি না। যে বা যারা বাংলা চলচ্চিত্রাঙ্গানকে এতো বড় ক্ষতি করল, তাকে বা তাদের কি বিচার হবে না?
সরকার, সাংবাদিক, আইনজ্ঞ, সুশীল সমাজ, ব্লগার, মিডিয়া ব্যাক্তিত্ব, শিল্পী, সহ সকল মানুষের কাছে আবেদন-সালমান হত্যার সুষ্ঠু বিচার করুন।
No comments:
Post a Comment