Social Icons

Sunday, February 21, 2016

জাঠ কোটার দাবিতে উত্তাল হরিয়ানা, নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৮

ভারতের সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও চাকরিতে অন্যান্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মতোই সুযোগ-সুবিধার দাবিতে জাঠদের আন্দোলনে উত্তাল হয়ে উঠেছে উত্তরাঞ্চলীয় রাজ্য হরিয়ানা। এই বিদ্রোহে এখন পর্যন্ত আট জন নিহত হয়েছে, আহত হয়েছে কমপক্ষে ২৫০ জন।
 
ভারতের বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম জানিয়েছে, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে শুক্রবার রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় কারফিউ জারির পর শনিবার নামানো হয়েছে সেনাবাহিনী। দাবি পূরণের আশ্বাসও দেওয়া হয়েছে। তবে তারপরও ঘরে ফেরেনি আন্দোলনকারীরা। শনিবার কারফিউয়ের মধ্যে সেনাবাহিনীর উপস্থিতিতে একটি পেট্রোল পাম্পে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে তারা। বিক্ষোভ সহিংসতায় বিকেলে একজন মারা যাওয়ার খবরও পাওয়া গেছে। রবিবার পর্যন্ত  রাজ্যে আটজনের প্রাণহানির খবর পাওয়া গেছে। আহত হয়েছে দেড়শতাধিক। সম্প্রদায়ের ভিত্তিতে জাঠদের কোটার প্রস্তাব এক বছর আগেই খারিজ করে দেয় সর্বোচ্চ আদালত। তা নিয়ে ভেতরে ভেতরে অসন্তোষ চলছিল।
 
 
এরই ধারাবাহিকতায় জাঠদের অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণিভুক্ত (ওবিসি) হিসেবে গণ্য করে তাদেরও কোটার আওতায় আনা এবং তা নিয়ে রাজ্যে আইন পাশের দাবিতে গত এক সপ্তাহ ধরে বিক্ষোভ করছিল চলছিল বিভিন্ন শহরে। বৃহস্পতিবার সেই বিক্ষোভ নিয়ন্ত্রণের বাইরে যেতে শুরু করে। শুক্রবার তা সহিংস রূপ নেয়। পুলিশের গুলিতে তিনজনের মৃত্যুর পর বিক্ষোভের আগুন দাবানলের মতো ছড়াতে থাকে। এই অবস্থায় শুক্রবারই হরিয়ানার তিন শহর রোহতক, ভিওয়ানি ও ঝঝ্ঝরে কারফিউ জারি করে পুলিশ। পরিস্থিতির আরও অবনতি হওয়ায় শনিবার সোনিপত ও গোহানাতেও কারফিউ জারি করা হয়। হরিয়ানার প্রায় সব শহরে সেনা মোতায়েন করে ফ্ল্যাগ মার্চও করা হয়।
 
 
তবে রোহতকের পরিস্থিতি এখনও অগ্নিগর্ভ। সেখানে সে‌না নামাতে গিয়ে শনিবার সেনাবাহিনীকে বাধ্য হয়ে হেলিকপ্টার ব্যবহার করতে হয়। এদিকে হরিয়ানার আন্দোলনের আঁচ রাজধানী দিল্লি ও পশ্চিম উত্তরপ্রদেশ ও রাজস্থানে ছড়ানোর আশঙ্কায় উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে নরেন্দ্র মোদী সরকার। শুক্রবার রাতেই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং, পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ, অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী মনোহর পর্রিকর দফায় দফায় বৈঠক করেন। হরিয়ানার জাঠ নেতাদের সঙ্গেও কেন্দ্রের নেতারা ফোনে কথা বলে তাদের শান্ত করার চেষ্টা করেন।
 
এরপরও বিক্ষোভ অব্যাহত রয়েছে। কারণ আন্দোলনে সম্প্রদায়ের কোনো নেতারই সামগ্রিক নিয়ন্ত্রণ নেই। জাঠ পরিবারের ছেলেমেয়েরা বেপরোয়াভাবে রাস্তায় নেমেছ। তাই সেনাবাহিনী, আধাসামরিক বাহিনী ও পুলিশের মাধ্যমে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টার পাশাপাশি শনিবার তদের রাজনৈতিক বার্তা দেওয়ার চেষ্টা করেছে বিজেপি সরকার। রাজ্য সরকারও এদিন জাঠদের শিক্ষা ও চাকরি ক্ষেত্রে কোটার দাবি বিবেচনার আশ্বাস দিয়েছে।
 
কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী চৌধুরী বীরেন্দ্র সিংহ দিল্লিতে সংবাদ সম্মেলন করে বলেন, জাঠেদের সংরক্ষণের বিষয়টি কেন্দ্র বিবেচনা করছে। হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রী বিজেপি নেতা মনোহরলাল খট্টর বলেন, জাঠেদের আবেগ বুঝতে তার অসুবিধা হচ্ছে না। তিনি মনে করেন, তাদের সংরক্ষণ পাওয়া উচিত। কিন্তু সেই আলোচনা শুরু হওয়ার আগে রাজ্যে শান্তির পরিবেশ ফেরানো জরুরি। এজন্য জাঠ পরিবারগুলির প্রবীণদের আবেদন জানিয়ে খট্টর বলেছেন, গুরুজনদের উচিৎ পরিবারের ছেলে-মেয়েদের প্রশমিত করা।
 
 
এর আগে শুক্রবার জাঠ নেতাদের সঙ্গে আলোচনায় বসে খট্টর বলেছিলেন, তাদের বিশেষ অনগ্রসর শ্রেণি হিসাবে সংরক্ষণ দেওয়া হবে। কিন্তু জাঠ নেতারা তাতে রাজ হননি। এদিকে, মোদী সরকারের নেতাদের কাছেও পরিষ্কার যে জাঠেদের কোটার ব্যবস্থা করলে তা সংবিধান পরিপন্থী হবে। যে কারণে গুজরাটের পাটেলদেরও কোটা দেওয়া যায়নি।
 
রাজনৈতিক কারণে ২০১৪ সালে হরিয়ানায় বিধানসভা ভোটের আগে সেখানকার ভূপেন্দ্র হুডা সরকার জাঠ কোটায় সায় দিয়েছিল। তারপর মনমোহন সিংহ সরকার অন্যান্য পিছিয়ে পড়া সম্প্রদায়ের আওতায় তাদের কোটার ব্যবস্থা করে। তবে মনমোহন সরকারের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন হলে সর্বোচ্চ আদালত পরিষ্কার জানিয়ে দেয়, সম্প্রদায়ের ভিত্তিতে ওবিসি কোটার আওতায় কোটা দেওয়া যাবে না। কারণ, সামাজিক অনগ্রসরতাই কোটা দেওয়ার একমাত্র মাপকাঠি।          
 
গুজরাটের পাটেলদের মতো জাঠরা কোনোভাবেই সামাজিকভাবে অনগ্রসর নন। হরিয়ানার ২৯ শতাংশ মানুষ জাঠ। চাষবাষের জমিজমা থাকায় আর্থিক ও সামাজিক দিক থেকে তারা পিছিয়ে ছিলেন না। তাই নব্বই দশকের গোড়া থেকে সংরক্ষণের দাবিতে জাঠরা বারবার আন্দোলনে নামলেও তা সফল হয়নি। এনডিটিভি ও ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস।

No comments:

Post a Comment

 

© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত । এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি

সম্পাদকীয় কার্যলয়

Rua padre germano mayar, cristo rio -80040-170 Curitiba, Brazil. Contact: +55 41 30583822 email: worldnewsbbr@gmail.com Website: http://worldnewsbbr.blogspot.com.br

সম্পাদক ও প্রকাশক

Jahangir Alom
Email- worldnewsbb2@gmail.com
worldnewsbbbrazil@gmail.com
 
Blogger Templates