Social Icons

Friday, August 18, 2017

মামলা করেও বেতন পাচ্ছে না সৌদি প্রবাসী কয়েক’শ শ্রমিক


নিজের দেশ ও প্রবাসে সংশ্লিষ্ট দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখার পরও অভিবাসী শ্রমিকরা প্রতিনিয়ত প্রতারণা ও হয়রানির শিকার হচ্ছেন। পদে পদে লঙ্ঘিত হচ্ছে তাদের শ্রম অধিকার। বেশিরভাগ সময় ন্যায্য বেতন ভাতা না পেয়ে এসব শ্রমিকের অসহায় জীবন যাপন করতে হচ্ছে ।
আমাদের দেশ থেকে সাধারণত দুই শ্রেণির লোক অভিবাসী শ্রমিক হিসেবে বিদেশ যাচ্ছে। এর মধ্যে শ্রমিক হিসেবে নিম্নবিত্ত লোকেরা দেশের বাইরে বেশি যাচ্ছে। দারিদ্র্যের পাশাপাশি শিক্ষার অভাব, বেকারত্ব, অর্থনৈতিকভাবে প্রান্তিক হওয়ার কারনে তারা অভিবাসী শ্রমিক হচ্ছে।
অন্যদিকে, মধ্যবিত্ত শ্রেণির লোকেরা শ্রমিক হিসাবে দেশের বাইরে যাওয়ার কারন হচ্ছে দেশে চাকরি ও কর্মসংস্থানের অভাব। কিন্তু এরই মাঝে নানান ভোগান্তি ও বেতন-ভাতা বন্ধ করে দিয়ে আবার দেশে ফেরত পাঠানোর ফলে অনেক সমস্যায় পড়তে হয় এসব অভিবাসী শ্রমিকদের। এমনি সমস্যায় জর্জরিত সৌদি আরবের জেদ্দার ইন্ডাস্ট্রিয়াল এরিয়াতে সৌদি ইলেকট্রু কোম্পানির শ্রমিকরা।
গত দুই বছর ধরে বাংলাদেশ, ইন্ডিয়ান, পাকিস্তান ও এশিয়ার অন্যান্য দেশের প্রায় আটশো শ্রমিক দুই বছর ধরে বেতন, ও চিকিৎসা সেবা পাচ্ছে না। বেতন না পেয়ে এসব শ্রমিক ও তাদের সাথে থাকা পরিবারের সদস্যদের নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে। এদের মধ্যে বাংলাদেশি ২৫০ জন শ্রমিক রয়েছে।
জেদ্দাস্থ বাংলাদেশ কনসুলেটের লেবার কাউন্সিল এর সহায়তায় গত ২০১৫ সালে শ্রমিকেরা সৌদি লেবার কোর্ট কোম্পানির মালিক ও ম্যানেজমেন্ট এর নামে মামলা করে। লেবার কোর্ট শ্রমিকদের পক্ষে রায় দেয় এবং তাদের বেতন ভাতা পরিশোধ করার নির্দেশ দেয়। কিন্তু কোম্পানি বেতন ভাতা না নাদিয়ে উল্টো তাদের খাবার বন্ধ করে দেয়। এখন প্রায় বাংলাদেশি শ্রমিকরা না খাবার আর চিকিৎসার অভাবে মানবেতর জীবন যাপন করছে।
এরপর, গত বছর বেতন ভাতা না পাওয়ায় শ্রমিকেরা সৌদি উচ্চ আদালতে আরেকটি মামলা করে। তখন ওই রায়েও বেতন ভাতা পরিশোধ করার নির্দেশ দেয়া হয়। ১৫ সপ্তাহ ধরে কোম্পানি ম্যানেজার ও দুই কর্মকর্তা লাপাত্তা হয়ে গেলেও কিছু শ্রমিক তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন। বিনিময়ে পাচ্ছেন না তাদের শ্রমের ন্যায্য মজুরী বেতন ভাতা ও চিকিৎসা সেবা।
সর্বশেষ আবারও বিষয়টি সৌদি উচ্চ আদলতের নজরে আনলে কোম্পানির মালিক ও ম্যানেজারকে গ্রেফতারের নির্দেশ দেয় আদালত, কিন্তু তাতেও কোন লাভ হয়নি। জানা গেছে, বাংলাদেশে কনসুলেট জেদ্দার কনসাল জেনারেল এফ, এম বোরহান উদ্দিন শ্রমিকদের এই সমস্যা দূর করার লক্ষ্যে একজন অভিজ্ঞ আইনজীবী নিয়োগ দিয়েছেন।
ওই কোম্পানির একজন শ্রমিক আব্দুল কাদের টিপু বলেন, ‘গত আঠারো বছর ধরে এই কোম্পানিতে কাজ করে আসছি, কিন্তু হঠাৎ করে শ্রমিকদের বেতন ভাতা বন্ধ করে দেয়া হয়। গত দুই বছর যাবত বেতন পাচ্ছি না শ্রমিকদের ইকামা নবায়ন না হওয়ায় সৌদি পুলিশের কাছেও হেনস্তার শিকার হতে হচ্ছে। কাউকে কাউকে ধরে জেলের মাধ্যমে দেশে পাঠিয়ে দিচ্ছে। এসব শ্রমিক অর্ধাহারে অনাহারে দিন কাটাচ্ছে। এভাবে থেকে এরইমধ্যে কেউ কেউ অসুস্থ হয়ে পড়েছেন‘। তবে চিকিৎসা নেয়ার মত যথেষ্ট সামর্থ্য তাদের নেই। সামনের দিনগুলো কিভাবে তাদের চলবে এ নিয়ে শঙ্কিত তারা।
অন্য একজন শ্রমিক জানান, বেতন ভাতা না পাওয়ায় আমাদের পরিবার পরিজন নিয়ে অসহায় হয়ে পড়ছি। স্কুলের বেতন দিতে না পারায় সন্তানদের স্কুল যাওয়া বন্ধ। টাকার অভাবে সংসার কিভাবে চলবে সন্দেহ আছে আমার জীবন মরণের ঝুঁকিও রয়েছে। এতো কষ্ট করে কাজ করেছি কিন্তু বেতন না পাওয়ায় আমরা বাধ্য হয়ে রাস্তায় মরতে যাচ্ছি। অনেক শ্রমিক ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তাদের অভিযোগ, প্রশাসনের কাছে গিয়েও কোনো ধরনের সহযোগিতা পাওয়া যায় না।

No comments:

Post a Comment

 

© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত । এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি

সম্পাদকীয় কার্যলয়

Rua padre germano mayar, cristo rio -80040-170 Curitiba, Brazil. Contact: +55 41 30583822 email: worldnewsbbr@gmail.com Website: http://worldnewsbbr.blogspot.com.br

সম্পাদক ও প্রকাশক

Jahangir Alom
Email- worldnewsbb2@gmail.com
worldnewsbbbrazil@gmail.com
 
Blogger Templates