সুস্থ থাকতে নিয়মিত হাঁটার বিকল্প নেই। নিয়মিত হাঁটা শরীরের অনেক রোগবালাই দূর করে শরীর সতেজ ও চাঙ্গা রাখে। কিন্তু হার্টের রোগীদের জন্য হাঁটার সবচেয়ে ভালো সময় বিকাল। কারণ হার্টের রোগীদের ক্ষেত্রে সকালে বেশি হাঁটলে হার্ট অ্যাটাক হওয়ার আশঙ্কা থাকে।
হার্ট অ্যাটাক কী?
মূলকথা হার্ট অ্যাটাক হল- হার্ট ঠিকমতো কাজ না করা। করোনারি আর্টারি নামে হৃৎপিণ্ডের গায়ে থাকে দুটি ছোট ধমনী।এরাই হৃৎপিণ্ডের পুষ্টির জোগান দেয়। কোনো কারণে এই করোনারি আর্টারিতে যদি ব্লক সৃষ্টি হয়, তা হলে যে এলাকা ওই আর্টারি বা ধমনীর রক্তের পুষ্টি নিয়ে চলে সে জায়গার হৃৎপেশি কাজ করে না। তখনই হার্ট অ্যাটাক হয়ে থাকে। এর কেতাবি নাম মায়োকার্ডিয়াল ইনফেকশন।
বুকে প্রচণ্ড ব্যথা অনুভূত হয়। এই ব্যথা ২০-৩০ মিনিট স্থায়ী হয়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই রোগী হাসপাতালে পৌঁছার আগেই মৃত্যুবরণ করে। তাই এটি একটি মেডিকেল এমার্জেন্সি। যাদের হার্টে ব্লক রয়েছে, ওই সব রোগীর হাঁটার ক্ষেত্রে অনেক সচেতন হতে হবে। হার্টের রোগীরা কখনই সকালে হাঁটবেন না। কারণ সারারাত ঘুমানোর পর শরীর বিশ্রামে থাকে। হঠাৎ সকালে উঠে হাঁটা শুরু করলে শরীরের রক্তচাপ বেড়ে যেতে পারে। মুহূর্তে ঘটতে পারে দুর্ঘটনা। অর্থাৎ হতে পারে হার্ট অ্যাটাক।
হার্টের রোগীদের আরও যেসব বিষয় মেনে চলার পরামর্শ দিয়েছেন ডা. এম ইয়াছিন আলী। আসুন জেনে নিই বেশ কিছু পরামর্শ।
সকালে হাঁটা
হার্টের রোগীরা অবশ্যই হাঁটবেন। তবে সকালে নয়; বিকালে। কারণ হার্টের রোগীরা সকালে হাঁটলে হার্ট অ্যাটাক হওয়ার আশঙ্কা থাকে।
অ্যালকোহলজাতীয় খাদ্য পরিহার করা
হার্টের রোগীদের অ্যালকোহলজাতীয় খাদ্য পরিহার করতে হবে। যদি কারো মদ্যপান করার অভ্যাস থাকলে তা ছেড়ে দিন। নিতান্তই না পারলে তা পরিমাণে কমিয়ে আনুন।
ধূমপান থেকে বিরত থাকা
প্রত্যক্ষ ধূমপায়ীরা তো বটেই পরোক্ষ ধূমপায়ীদেরও হৃৎপিণ্ড ও ফুসফুস ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আপনি যদি ধূমপান ত্যাগ করেন, তা হলে ২ বছরের মধ্যেই আপনার হার্ট অ্যাটাকের সম্ভাবনা কমে যাবে এক-তৃতীয়াংশ।
খাবারের ক্ষেত্রে সচেতনতা
কোলেস্টেরল সমৃদ্ধ ও সম্পৃক্ত (saturated) ফ্যাট সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া বাদ দিতে হবে। ডিমের কুসুম (ডিমের সাদা অংশ খাওয়া যাবে), কলিজা, মাছের ডিম, খাসি-গরুর চর্বিযুক্ত মাংস, হাঁস-মুরগির চামড়া, হাড়ের মজ্জা, ঘি, মাখন, ডালডা, মার্জারিন, গলদা চিংড়ি, নারিকেল উপকরণ দিয়ে তৈরি খাবার খাওয়া যাবে। এ ছাড়া ভাতের সঙ্গে অতিরিক্ত লবণ খাওয়া যাবে না। এটি মারাত্মক ক্ষতিকর। তবে প্রচুর ফল ও টাটকা সবজি খান। খাবারের তালিকায় আঁশযুক্ত খাবারের পরিমাণ বেশি রাখুন।
ওষুধ সঙ্গে রাখুন
হার্টের রোগীরা সবসময় ওষুধ সঙ্গে রাখুন। হার্টের রোগীদের বুকে প্রচণ্ড ব্যথা অনুভূত হয়। এই ব্যথা ২০-৩০ মিনিট স্থায়ী হয়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই রোগী হাসপাতালে পৌঁছার আগেই মৃত্যুবরণ করে।
লেখক : ডা. এম ইয়াছিন আলী
চেয়ারম্যান ও চিফ কনসালট্যান্ট, সিটি ফিজিওথেরাপি হাসপাতাল, ঢাকা
No comments:
Post a Comment