Social Icons

Wednesday, October 4, 2017

রেমিটেন্স বাড়াতে পুরস্কার; প্রভাব না পড়ার আশঙ্কা সংশ্লিষ্টদের

বিশ্ব ব্যাংকের হিসাব অনুযায়ী যেসব দেশে প্রবাসী আয় কমেছে তার সর্বনিম্নে অবস্থান করছে বাংলাদেশ। আর এর উল্লেখযোগ্য কারণ হিসেবে দেখিয়েছে, অবৈধপথে বাংলাদেশের অভিবাসীদের দেশে টাকা পাঠানোর প্রবণতা । যার কারণে বড় অঙ্কের রেমিটেন্স হারাচ্ছে বাংলাদেশ। তাই বৈধ পথে এসব অভিবাসীদের দেশে টাকা পাঠাতে উৎসাহী করতে সর্বোচ্চ রেমিটেন্স প্রেরণকারী ব্যক্তি ও গ্রহণকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে রেমিটেন্স অ্যাওয়ার্ড দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক (এনআরবিএস)। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ফাইন্যান্সিয়াল ইনক্লুশন ডিপার্টমেন্টের মহাব্যবস্থাপক মো. আবুল বাশার গতমাসে এ ঘোষণা দেন।
রেমিটেন্স প্রবাহ বাড়াতে পাঁচটি ক্যাটাগরিতে ‘বাংলাদেশ ব্যাংক রেমিট্যান্স অ্যাওয়ার্ড পুরস্কার ঘোষণা করেছে। কিন্তু কতোটা উৎসাহী হবে এ ঘোষণায় প্রবাসীরা? সেটাই এখন সরকারের চ্যালেঞ্জের বিষয়। কারণ বাংলাদেশের যেসকল অভিবাসী বিদেশে যাচ্ছে তাদের বড় একটি অংশ অশিক্ষিত ও অবৈধ। যাদের অনেকের বৈধ পথে টাকা পাঠানোর ইচ্ছা থাকলেও পাসপোট ও ভিসাগত জটিলতায় সে পথ ব্যবহার করতে পারছে না। আবার অনেকেই অনলাইন ব্যাংকিং কিংবা আধুনিক আর্থিক লেনদেন সুবিধায় যুক্ত হতে অনাগ্রহী। উপায় না পেয়ে তাই অনেকে সহজপথে হুন্ডি কিংবা ব্যাংকিং এজেন্টের দারস্ত হয়ে দেশে টাকা পাঠাচ্ছে।
দেশে রেমিটেন্স পাঠাতে প্রবাসীদের উৎসাহিত করতে বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে কয়েকটি ক্যাটাগরিতে এ পুরষ্কারকে ভাগ করা হয়েছে। দক্ষ রেমিটার, অদক্ষ রেমিটার, বন্ড ইনভেস্টর এনআরবি, এক্সচেঞ্জ হাউস ওনার এনআরবি ও সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স গ্রহণকারী ব্যাংক। বৈধ চ্যানেলে টাকা পাঠাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের উৎসাহী পুরষ্কারের ঘোষণার প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে আফ্রিকায় প্রবাসী বাংলাদেশি ব্যবসায়ী সাইফুল ইসলাম জানান, ‘বিষয়টি অত্যন্ত ইতিবাচক পদক্ষেপ। কিন্তু তার আগে, বিভিন্ন দেশে অবৈধ শ্রমিকদের বিষয়টি আমলে আনতে হবে। কারণ অবৈধ যেসব অভিবাসী বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রয়েছে, তাদের ইচ্ছা থাকলেও বৈধ পথ ব্যবহার করতে পারে না। তিনি ভয়েস বাংলাকে জানান, আফ্রিকায় প্রায় ২ লক্ষাধিক বাংলাদেশি রয়েছে। যাদের বেশির ভাগই অবৈধ। এরা কেউ ব্যাংকিং চ্যানেল ব্যবহার করে দেশে টাকা পাঠাতে পারে না। কারণ এখানে বাংলাদেশ সরকারের কূটনৈতিক তৎপরতা নেই বললেই চলে। ফলে অভিবাসীদের দেশে পাঠানো টাকার বড় একটি অংশ লেনদেন হচ্ছে অবৈধ পথে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০১৪-১৫ অর্থবছর থেকে রেমিটেন্স প্রবাহে মন্দাভাব থাকলেও ২০১৭-১৮ অর্থ বছরের গোড়ার দিকে চাঙ্গাভাব দেখা দিয়েছে। ওই অর্থবছরের আগস্ট মাসে প্রবাসীরা দেশে ১৪১৮.৫৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার দেশে পাঠিয়েছেন। কিন্তু বিশ্ব ব্যাংক বলছে অন্য কথা। যে পরিমাণ শ্রমিক বাংলাদেশ থেকে গেল এবং চলতি অর্থ বছরে শ্রম বাজারে প্রবেশ করেছে, সে অনুপাতে রেমিটেন্স বাংলাদেশে আসেনি। তবে রেমিটেন্স প্রবাহ না বাড়ার অনেক গুলো কারণ সনাক্ত করেছেন অভিবাসন ও ব্যাংক সংশ্লিষ্টরা, শ্রমিক পেশা, ভাষায় অদক্ষতা, কাজের নিম্নমান, অবৈধ শ্রমিক সংকট এবং আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম কমে যাওয়া। যার কারণে বাংলাদেশের যেসব বড় বড় শ্রম বাজার রয়েছে সেসব দেশ নিজ চাহিদা মেটাতে দেশীয় জনবল ও উদ্যোক্তা তৈরীর পদক্ষেপ হাতে নিয়েছে।
ব্যাংকিং চ্যানেলে অভিবাসীদের সংযুক্ত করতে এরইমধ্যে কিছু পদক্ষেপ হাতে নিয়েছে সরকার। যা প্রয়োগ করতে পারলে অনেক ক্ষেত্রে এ সংকট কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর আবু হেনা মোহাম্মদ রাজি হাসান বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক অবৈধভাবে দেশে অর্থ প্রেরণকারী কয়েকটি মোবাইল অ্যাকাউন্ট শনাক্ত করার পর, কয়েকটি মোবাইল ব্যাংকিং অপারেটরদের নিবিড় পর্যবেক্ষণে রেখেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের মতে, দেশে ১৫ অর্থবছরে ১৫৩১৬.৯১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, ১৬ অর্থবছরে ১৪৯৩১.১৫ মিলিয়ন ও ১৭ অর্থবছরে ১২৭৬৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স এসেছে। সৌদি আরব, কাতার, মালয়েশিয়া, বাহরাইন,সংযুক্ত আরব আমিরাত ও লিবিবার মতো দেশগুলোতে অর্থ লেনদেনে শক্ত অবস্থান বাংলাদেশ তৈরী করতে পারলে রেমিটেন্স বাড়ানো সম্ভব হবে বলে মনে করেন অভিবাসী ও সংশ্লিষ্টরা।

No comments:

Post a Comment

 

© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত । এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি

সম্পাদকীয় কার্যলয়

Rua padre germano mayar, cristo rio -80040-170 Curitiba, Brazil. Contact: +55 41 30583822 email: worldnewsbbr@gmail.com Website: http://worldnewsbbr.blogspot.com.br

সম্পাদক ও প্রকাশক

Jahangir Alom
Email- worldnewsbb2@gmail.com
worldnewsbbbrazil@gmail.com
 
Blogger Templates