Social Icons

Monday, October 16, 2017

আমেরিকার প্রান্তিক শহর গুলোতে বাড়ছে বাংলাদেশিদের সংখ্যা


বাংলাদেশিদের কাছে আমেরিকা একটি স্বপ্নের দেশ।  প্রতিবছরই অনেক বাংলাদেশি স্বপ্নের ঠিকানা আমারিকায় পাড়ি জমাচ্ছে। কিন্তু সেখানে গিয়ে অনেকেই হতাশাগ্রস্থ। জীবনমান, চলাচলে অতিরিক্ত ব্যয়, মুসলিম বিদ্বেষী আচরণ ও কর্মহীনতায় তাদের স্বপ্নের দেশে এখন বসবাস দুরূহ হয়ে উঠেছে। আমেরিকার প্রচুর বাংলাদেশি বসবাস করে নিউইয়র্কে। কিন্তু নিউইয়র্কের জীবনযাত্রা প্রচুর ব্য্যবহুল হওয়ায় এরই মধ্যে অনেক বাংলাদেশি সেখান থেকে আমেরিকার অন্য শহরগুলোতে বসবাস শুরু করেছে।
তাদের অনেকেই সরে যাচ্ছেন অন্য রাজ্যে। নতুন অভিবাসীরা ছাড়াও দীর্ঘদিন ধরে সেখানে বাস করা প্রবাসী বাংলাদেশিদের অনেকেই পরিবার নিয়ে অন্যান্য অঙ্গরাজ্যে চলে গেছেন। অনেকে আবার  চলে যাওয়ার পরিকল্পনা করছেন।
নিউইয়র্কের ট্যাক্সি চালক বাবলু বলেন, প্রতিদিনই নিউইয়র্ক থেকে দূরের রাজ্য মিশিগান বা প্রান্তিক নগর বাফেলোতে স্থানান্তরিত হওয়ার খবর আসছে। এর মূল কারণ হিসেবে তিনি জানান, নিউইয়র্কে যে পরিমাণ আয় করা যায়, তা দিয়ে সংসার চালানো কষ্টকর হয়ে উঠেছে। বাসা ভাড়াসহ সবকিছুর দাম যেমন বেড়েছে, তেমনি বেড়েছে পানি, গ্যাস ও বিদ্যুৎ বিল। এ ছাড়া সন্তানদের লেখাপড়াসহ অন্যান্য ব্যয় সামাল দিতে নিম্ন ও মধ্য আয়ের প্রবাসীদের হিমশিম খেতে হচ্ছে। স্বপ্নের দেশে এসে স্বপ্ন ভঙ্গের কারণে আত্মহত্যার মতো ঘটনাও ঘটছে বলে জানান তিনি ।
নিউইয়র্কের বাংলাদেশি কমিউনিটির নেতা ফজলুর হাসান বলেন,  সারা বিশ্ব থেকে অভিবাসীদের আগমন ব্যাপকভাবে হয়েছে নিউইয়র্কে। ফলে এখানে কর্মসংস্থানে প্রতিযোগিতা অনেক বেশি। অন্যদিকে, মিশিগানের মতো প্রান্তিক রাজ্যে থেকে শ্বেতাঙ্গদের স্থানান্তর ঘটেছে ব্যাপকভাবে। অদক্ষ এবং আধা দক্ষদের জন্য এসব প্রান্তিক রাজ্যে রয়েছে কাজের ভালো ব্যবস্থা। বিশেষত নারীদের জন্য  বিভিন্ন কলকারখানায় কাজের সুযোগ রয়েছে মিশিগানে। এখানে শিক্ষিত এবং অর্ধ-শিক্ষিত নারীরা দিনে বা রাতের শিফটে কাজ করতে পারেন। তা ছাড়া বাসভাড়াও নাগালের মধ্যে। স্বল্প আয়ের লোকদের জন্য রয়েছে ফুড স্ট্যাম্পের সুব্যবস্থা, যা নিউইয়র্কে পাওয়া দুর্লভ। তাই মিশিগান অনেক প্রবাসীর প্রিয় গন্তব্য হয়ে উঠেছে বলে জানান তিনি।
নিউইয়র্কের থেকে বাফেলোতে আসা প্রবাসী বাংলাদেশি ব্যবসায় মোখলেসুর রহমান বলেন,  মিশিগানের মতো বহু বাংলাদেশি পরিবার নিউইয়র্কের বাফেলোতে ঠাঁই নিয়েছেন। সেখানেও নিজের জন্য স্বপ্নের ঠিকানা করে নিয়েছেন। বাড়ির দাম কম হওয়াতে বাংলাদেশিরা ছুটছেন বাফেলোতো। পাঁচ-দশ হাজার ডলার ডাউন পেমেন্ট দিয়ে বাড়ির মালিক হচ্ছেন তারা। এখানে বাসা ভাড়াও কম। তিন থেকে চারশ  ডলারেও বাসা ভাড়া পাওয়া যায়। কাজের সুযোগও আছে।  তিনি জানান, আমার মত অনেক বাংলাদেশি পরিবার নিউইয়র্ক ছেড়ে বাফেলো চলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তিনি আরও জানান, শুধু বাফেলোতে নয়, তার এক বন্ধু বহু বছর ধরে নিউইয়র্কে বাস করার পর গত বছর মিশিগানের হ্যামট্রিক শহরে চলে যান। সেখানে সে দুটি পরিবার থাকা যায় এমন একটি  বাড়ি মাত্র ৪৮ হাজার ডলারে কিনেছেন। তিনি আরও জানান, নিউইয়র্ক ছেড়ে যারা  বাফেলোর মতো প্রান্তিক শহরগুলোতে চলে আসছে তারা এখানে এসে পরিবারের জন্য বাড়ি কিনেছে, যা নিউইয়র্কে চিন্তাও করতে পারা যায় না। রাত দিন কাজ করে সপ্তাহে চার থেকে পাঁচশ ডলার আয় করা সম্ভব হয় এসব এলাকায়। সব মিলিয়ে বাংলাদেশিরা অনেক ভালো আছে আমেরিকার প্রান্তিক শহরগুলোতে। যার কারণে মোখলেসুর, ফজলুর বা বাবলুর মতো অনেক বাংলাদেশি জীবনযাত্রার মান সহনীয় করার জন্য আমেরিকার বড়বড় শহরগুলো ছেড়ে প্রান্তিক শহরগুলো বসবাস শুরু করেছে।

No comments:

Post a Comment

 

© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত । এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি

সম্পাদকীয় কার্যলয়

Rua padre germano mayar, cristo rio -80040-170 Curitiba, Brazil. Contact: +55 41 30583822 email: worldnewsbbr@gmail.com Website: http://worldnewsbbr.blogspot.com.br

সম্পাদক ও প্রকাশক

Jahangir Alom
Email- worldnewsbb2@gmail.com
worldnewsbbbrazil@gmail.com
 
Blogger Templates