বাংলাদেশের তুলনায় অনেক ছোট দেশ সিঙ্গাপুরে কাজের ব্যাপক সুযোগ রয়েছে। আর সিঙ্গাপুরে বাংলাদেশি শ্রমিকের চাহিদাও অনেক। স্বপ্নের এই সিঙ্গাপুরে কাজের সন্ধান করতে বাংলাদেশি বেকার যুবকরা মাসের পর মাস প্রশিক্ষণ নিয়ে কাজ করার উপযুক্ত হয়ে সিঙ্গাপুরে যাচ্ছে; যাতে ওই দেশে কোনো ধরনের সমস্যায় পড়তে না হয় সিঙ্গাপুর প্রবাসী খালেক হোসাইন জানান, সিঙ্গাপুরের মানুষ বাংলাদেশিদের খুবই পছন্দ করে। কারণ তারা খুবই দায়িত্বশীলতার সঙ্গে কাজ করেন।
বাংলাদেশিরা কাজের বাইরে কিছুই বোঝে না। একটি হোয়াসিং কোম্পানির কর্মকর্তা জানান, তাদের কোম্পানিতে শতকরা ৬০ ভাগই বাংলাদেশি শ্রমিক। তবে অনেকেই বাংলাদেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করছে বলেও কারো কারো অভিযোগ রয়েছে। যারা সিঙ্গাপুরে আমাদের ভাবমূর্তি নষ্ট করছে তাদের চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় আনতে বাংলাদেশ সরকারের প্রতি অনুরোধ জানান স্থানীয় প্রবাসীরা। পরিসংখ্যান বলছে, বাংলাদেশ থেকে দক্ষতা অর্জন করে প্রায় ১ লাখ ৬০ হাজার কর্মী বর্তমানে সিঙ্গাপুরে নির্মাণ ও জাহাজ শিল্পসহ অন্যান্য ক্ষেত্রে কাজ করছেন। সিঙ্গাপুরের অর্থনৈতিক উন্নয়নে বাংলাদেশি কর্মীদের অবদান সবসময় স্থানীয়ভাবে স্মরণ করা হয়। এছাড়া বাংলাদেশে শীর্ষ দশ বৈদেশিক মুদ্রা প্রেরণকারী দেশের মধ্যেও সিঙ্গাপুর অন্যতম।
সিঙ্গাপুর থেকে বৈধভাবে গতবছর বাংলাদেশে বৈদেশিক মুদ্রা পাঠানোর পরিমাণ ছিল ৪০৭.৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে পাঠানো বৈদেশিক মুদ্রার পরিমাণ ৯৭.৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। সিঙ্গাপুর একাধারে বাংলাদেশের শীর্ষ পাঁচ রপ্তানিকারক দেশের একটি। ২০১৩ সালে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য বিগত বছরের তুলনায় শতকরা ২০ ভাগ বেড়ে ৩.৩ বিলিয়ন সিঙ্গাপুর ডলারে উন্নীত হয়। ২০১৪ সালে বাংলাদেশ থেকে সিঙ্গাপুরে ১৬৭ মিলিয়ন সিঙ্গাপুর ডলারের পণ্য রপ্তানির বিপরীতে সিঙ্গাপুর থেকে বাংলাদেশে আমদানির পরিমাণ ছিল ৪.১ বিলিয়ন সিঙ্গাপুর ডলারের পণ্য। বাংলাদেশ থেকে সিঙ্গাপুরে রপ্তানিকৃত পণ্যের তালিতায় রয়েছে তৈরি পোশাক, নাফতা, পাটজাত পণ্য, চামড়াজাত পণ্য, জুতা, ব্যাগ, তাজা সবজি ও হিমায়িত মাছ।
অন্যদিকে সিঙ্গাপুর থেকে বাংলাদেশে আমদানীকৃত পণ্যের তালিকায় রয়েছে পেট্রোলজাত পণ্য, শিল্পে ব্যবহৃত রাসায়নিক উপাদান, কাপিটাল মেশিনারি, কম্পিউটার এবং এর যন্ত্রাংশ, নন-ফেরাস মেটাল, ইলেকট্রিকাল ও ইলেকট্রনিক্স যন্ত্রাংশ। এর আগে ২০১৩-১৪ অর্থবছরে সিঙ্গাপুর ১৪০.৩৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বাংলাদেশে বিনিয়োগ করে বলে জানান হাইকমিশনার মাহবুব উজ জামান। বর্তমান সময় পর্যন্ত মোট বিনিয়োগের পরিমাণ ৪০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।
No comments:
Post a Comment