ইউরোপের ক্ষুদ্রতম ও সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ দেশগুলির একটি বেলজিয়াম। আয়তনে ছোট হলেও ইউরোপের অন্যতম প্রভাবশালী দেশ এটি।এ দেশটিতে চার-পাঁচ হাজার বাংলাদেশির বসবাস। তবে বেশিরভাগ প্রবাসী বাংলাদেশি শিক্ষার্থী হিসেবে প্রথমে আশা শুরু করলেও বর্তমানে ইউরোপের অনেক দেশে বসবাসরত বাংলাদেশি কাজের খোঁজে এ দেশটিতে আশা শুরু করেছে। এসব বাংলাদেশির মালিকানায় ব্রাসেলস, নামুর, এনটারপেনসহ বিভিন্ন শহরে আছে প্রায় তিন হাজার গ্রোসারি শপ।
এগুলোর বেশির ভাগই আবার নাইট শপ। বেলজিয়ামের প্রবাসী ব্যবসায়ী সাইফুর রহমান পলাশ বলেন, বেলজিয়ামের বেশিরভাগ বাংলাদেশে ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানে বাংলাদেশের সব পণ্যই পাওয়া যায়। আর এ দোকানগুলোর ক্রেতা ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলংকা, নেপাল, ভুটান, আফ্রিকান দেশসহ খোদ বেলজিয়ান ও ইউরোপিয়ানরা।
পলাশ বলেন, বাংলাদেশি দোকানগুলোত আছে বাংলাদেশি সব জাতের মাছ, সবজি, ডাল, তেল, পান, সুপারি। এছাড়ও বিভিন্ন ধরনের বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠানের বিস্কুট, চানাচুর, প্রসাধনীসহ নানা পণ্য। শুধু শুকনো খাবারই নয় এর পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের মাছ পাওয়া যায় এ দোকানগুলোতে। মাছের মধ্যে কই, শিং, গুলশা, গুচি, পুটি, শোল, বোয়াল, ইলিশ, মলা, ঢেলা, চিংড়ি, টাকি, আইড়, ট্যাংরা, চ্যালেন্দা, পাঙ্গাস, কাইকলা, রুই, কাতলা, কালো বাউস, বাইনসহ নানা প্রজাতির মাছ বেশি পাওয়া যায় বেলজিয়ামের বাংলাদেশি দোকানগুলোতে। তবে কিছু দোকানে সামুদ্রিক মাছের সমাহার খেয়াল করা যায় বলে জানান পলাশ। বেলজিয়ামে বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠানগুলোর পণ্য বিক্রয় হয়ে কিনা এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখানকার ব্যবসায়ীরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করে বাংলাদেশি পণ্যের চাহিদা বাড়াতে। কারণ এর মাধ্যমে বাংলাদেশি পণ্যর নতুন বাজার তৈরি করতে সক্ষম হবে তারা বলেও মনে করেন পলাশ। তিনি বলেন, ব্যবসায়ীরা বাংলাদেশি প্রাণ, স্কয়ার, বিডি ফুড, হক, প্রিন্সসহ বিভিন্ন কোম্পানির বিস্কুট, টোস্ট, চকলেট, আচার, চাটনি, সেমাই, চাল, ডাল, তেল, চানাচুর, বুটভাজা সবই পাওয়া যায় এ দোকানগুলোতে। এ প্রসঙ্গে বেলজিয়াম প্রবাসী বাংলাদেশি ব্যবসায়ী বরুন বলেন, এখন যুক্তরাজ্য, জার্মানি, ইটালি ও ফ্রান্স হয়ে বাংলাদেশি সব পণ্য আসে বেলজিয়ামে। তিনি বলেন, বাংলাদেশি কমিউনিটি ছাড়াও এশিয়ান, আফ্রিকান, ইউরোপিয়ানরা বাংলাদেশি পণ্যের অনেক বড় ক্রেতা।তবে বর্তমান অবস্থা কিছুটা খারাপ বলেও জানান বরুন।
তিনি বলেন, দুই বছর ধরে বেলজিয়ামের সন্ত্রাসী হামলায় আতঙ্কে রয়েছে ব্যবসায়ীরা। কারণ এ সন্ত্রাসী হামালায় বাংলাদেশিদের প্রতি একধরনের প্রতিহিংসা মূলক মনোভাব গড়ে উঠেছে বেলজিয়ামের নাগরিকদের। বরুণ বলেন এঘটনা ঘটার পর শহরজুড়ে সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি করেছে বেলজিয়াম সরকার। fole সন্ত্রাসী হামলার ভয়ে সহজে কেউ কেনাকাটার জন্য বের হতে সাহস পাচ্ছেন না। এতে ছোট খাটো ব্যবসায়ীরা পড়েছেন চরম বিপাকে। এতে বাংলাদেশি ব্যসায় প্রতিষ্ঠাগুলোতে দেখা দিয়েছে নানা ধরনের সমস্যা। বরুণ ও পলাশ দুজনেই জানান, বাংলাদেশিদের একটি বিরাট বাজার রয়েছে বেলজিয়ামে।কিন্তু সম্প্রতি দুই দফা আত্মঘাতিক হামলায় বাংলাদেশিদের অবস্থা কিছুটা খারাপ। তাই বেলজিয়ামে বাংলাদেশ হাইকমিশনের এখনি এবিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত। কারণ এসমস্যা দ্রুত দূর না করা গেলে নানা সমস্যায় পড়বে বাংলাদেশি ব্যবসায়ীরা। একই সাথে এই জায়গাগুলো দখল করবে অন্যদেশের ব্যবসায়ীরা। তাই দ্রুত এবিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়ার অনুরোধ জানান এ দুই প্রবাসী ব্যবসায়ী।
No comments:
Post a Comment