সৌদি আরবে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশিদের মেশিন রিডেবল পাসর্পোট (এমআরপি) নবায়ন করতে আর বাংলাদেশ দূতাবাসে যেতে হবে না। পাসর্পোট নবায়ন করতে হলে প্রবাসীদের সৌদি আরবের র্পাশ্বর্বতী যে কোন পোস্ট অফিস থেকে এ সুবিধা গ্রহণ করতে পারবে।মধ্যপ্রাচ্যে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় এই শ্রমবাজারে প্রবাসীদের পাসপোট বিড়ম্বনার ভোগান্তি কমাতে এ ধরণের পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছে বাংলাদেশি কমিউনিটিগুলো।কারণ নানা ক্ষেত্রে প্রবাসীরা সাধারণ পাসপোর্টে ভোগান্তি ও বিড়ম্বনার শিকার হিসেবে
প্রবাসীদের পাসপোর্ট সেবা সহজ করতে এবং ভোগান্তি কমাতে এ ধরণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানান সৌদিতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত গোলাম মসীহ। রিয়াদে অবস্থিত সৌদি পোস্ট অফিসে পুরোনো পাসপোর্টের ফটোকপি এবং ইকামা (আকামা) কপি জমা দিয়ে নতুন এমআরপি সংগ্রহ করা যাবে। সম্প্রতি রিয়াদে বাংলাদেশ দূতাবাসে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
১ অক্টোবর থেকে এ কার্যক্রম শুরু হয়েছে। ফলে একদিকে প্রবাসীদের সময় ও কর্মঘণ্টা যেমন সাশ্রয় হবে, তেমনি বাঁচবে ভ্রমণ ব্যয়ও। সৌদি পোস্টের ২৪০ টি অফিসের মাধ্যমে জমা নেওয়া ও এমআরপি কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। আপাতত রিয়াদে অবস্থিত সৌদি পোস্ট অফিসের ১৭টি শাখায় এ কার্যক্রম চলবে। নভেম্বর থেকে অন্যান্য শহরেও এ সেবা পাওয়া যাবে। বিশেষ করে যেসব শহরে প্রবাসী বাংলাদেশিরা রয়েছেন সেই শহরগুলোতে।
সেবা গ্রহীতাদের সাথে কথা বলে জানা যায় যে, রিইস্যু’র জন্য দূতাবাসে আসতে হলে কমপক্ষে এক কর্ম দিবস ছুটি নিতে হয়। ছুটি না পেলে তাকে বাধ্য হয়ে একদিনের ছুটি বাবদ বেতন কেটে রাখা শর্তে দূতাবাসে আসতে হয়। যদি কোন প্রবাসী রিয়াদের বাইরে থেকে আসে সেক্ষেত্রে কমপক্ষে খরচ হয় ২৫০ রিয়াল এবং রিয়াদ থেকে আসলে খরচ হয় ৭০-৮০ রিয়াল। একইভাবে পাসপোট সংগ্রহের জন্য আসলে মোট খরচ হয় তার দ্বিগুন বা আরও বেশি।আর সৌদি পোস্টের মাধ্যমে এ সেবা নিতে আসলে দূতাবাসের নির্ধারিত ফি’ র অতিরিক্ত ৪০ রিয়াল (রিয়াদ শহরের ভিতরে অবস্থিত সৌদি পোস্টের অফিসে জমা দিলে)অথবা ৮০ রিয়াল জমা দিতে হয়।
সৌদি আরবে বাংলাদেশ দূতাবাস সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে প্রতিদিন দূতাবাসে গড়ে প্রায় ৬০০ লোক সেবা গ্রহন করতে আসেন। এর মধ্যে প্রায় ৩০০-৩৫০ জন সেবা গ্রহীতাই আসেন এমআরপি রিইস্যু’র জন্য।
উল্লেখ্য ২০১৪-২০১৫ সালের মধ্যে দূতাবাস প্রায় ৪ লক্ষ এমআরপি ইস্যু করেছিল। এই উল্লেখযোগ্য সংখ্যক পাসপোর্ট গ্রহীতার অধিকাংশই রিইস্যুর জন্য ২০১৮ সাল নাগাদ দূতাবাসে আসা শুরু করলে প্রতিদিন দূতাবাসে সেবা গ্রহিতার সংখ্যা প্রায় দেড় থেকে দুই হাজার হতে পারে। এত বিশাল সংখ্যক লোকের সমাগমের ফলে সেবা পেতে বিলম্ব হতে পারে।
যেসব প্রয়োজনীয় কাগজপত্র লাগবে
মেশিন রিডেবল পাসপোট (এমআরপি) পুণরায় নবায়নের জন্য যেসব সহায়ক ডকুমেন্টস লাগবে সেগুলো হলো- মেয়াদোত্তীর্ণ মূল পাসপোর্ট এবং তার একটি ফটোকপি (মূল পাসপোর্ট শুধু প্রদর্শন করতে হবে, জমা নেওয়া হবে না), মূল ইকামা ও ইকামার ফটোকপি (মূল ইকামা শুধু প্রদর্শন করতে হবে, জমা নেওয়া হবে না)।
সৌদি পোস্ট অফিস তাদের নির্দিষ্ট বুথের মাধ্যমে গ্রাহকের কাছ থেকে পূরণ করা রিইস্যু ফরম ও আনুষঙ্গিক কাগজপত্র সংগ্রহ করে দূতাবাসে জমা দেবে। নতুন পাসপোর্ট তৈরি হওয়ার পর দূতাবাস সেটি হস্তান্তর করলে সৌদি পোস্ট অফিস সেটা গ্রাহককে একই বুথের মাধ্যমে ফেরত দেবে। সৌদি পোস্ট অফিস সংগৃহীত রিইস্যুর আবেদনপত্রটি দূতাবাসে হস্তান্তরের সঙ্গে সঙ্গে একটি এসএমএস করবে এবং পাসপোর্ট বিতরণের জন্য প্রস্তুত হওয়া মাত্রই সংগ্রহের অনুরোধ জানিয়ে আরেকটি এসএমএস করবে। জমাদান থেকে শুরু করে পাসপোর্ট পাওয়া পর্যন্ত সময় লাগবে ২০ থেকে ২৫ দিন। এ ছাড়া যেকোনো সময় সৌদি পোস্ট অফিসের ওয়েবসাইট sp.com.sa-এ গিয়ে আবেদনটি কোন অবস্থায় রয়েছে তা জানা যাবে। বিস্তারিত জানতে পারেন এই ঠিকানায়- www.bangladeshembassy.org.sa ওয়েবসাইটে।
No comments:
Post a Comment