সম্প্রতি নিউইয়র্ক সিটির জ্যাকসন হাইটসে ৭৫ স্ট্রিটে ‘ওষি স্পা জোন্স’ ম্যাসেজ পার্লারে অভিযান চালিয়ে বেশ কয়েকজনকে আটক করে নিউইয়র্ক পুলিশ। এর মধ্যে রয়েছে এক বাংলাদেশি নারীও। বেআইনী কাজ-কর্ম চলার অভিযোগে বাংলাদেশি অধ্যুষিত এলাকার এই ম্যাসেজ পার্লারে পুলিশের অভিযান পরিচালিত হয়। পুলিশের দাবি, এসব পার্লারে রূপচর্চার আড়ালে চলছে অনৈতিক কর্মকান্ড।
স্থানীয়রা জানান, সংশ্লিষ্ট এলাকায় বেশ কিছু ভারতীয় মালিকানাধীন পার্লার রয়েছে। এসব পার্লারে অনেক বাঙালি মহিলা কাজ করেন। প্রশাসনের নিয়মের বাইরে গিয়ে এসব নারী লাইসেন্স ছাড়াই এ ধরনের পার্লারে ম্যাসেজ থেরাপিস্ট হিসেবে কাজ করে থাকেন। ফলে মাঝে মধ্যেই পুলিশি অভিযানে আটক হন তারা। তবে তাদের ছাড়া পেতেও খুব বেশি বেগ পেতে হয়না বলেও জানান এলাকাবাসী।
কোন নারীরা এ ধরনের পেশায় ঝুঁকছেন জানতে চাইলে জ্যাকসন হাইটসের প্রবাসী বাংলাদেশি আবিদ আল আজাদ জানান, স্বামীর সাথে নন-ইমিগ্র্যান্ট ভিসায় যুক্তরাষ্ট্রে আসার পর উচ্চাভিলাষের মোহে পরে অনেকেই স্বামী ত্যাগ করেন। অনেকে আবার স্থায়ী বাসের লোভে পড়ে স্থানীয়দের সঙ্গে একাধিক বিয়েসহ অনৈতিক কর্মকান্ডে জড়িয়ে যান। পরবর্তীতে এরা আর স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারেনা। বাধ্য হয়েই তখন ঢুকে পড়তে হয় ম্যাসেজ পার্লারের নামে দেহ ব্যবসার অন্ধকার দুনিয়ায়।
এদিকে প্রচলিত আছে যে, নিউইয়র্ক সিটির বিশেষ কয়েকটি এলাকায় একদল বখাটে যুবকের খপ্পরে পড়ে অনেক তরুণী, গৃহিণী সংসার ছেড়ে বিভিন্ন ম্যাসেজ পার্লারে ঢুকছেন। এমন মহিলার কেউ কেউ স্বামীর বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করেছেন এবং স্বামীকে তাদের কাছে যেতে নিষেধাজ্ঞা নেওয়ার তথ্যও জানা গেছে।
জানা গেছে, ওই যুবকেরা নির্যাতিতা মহিলা হিসেবে এসব নারীকে যুক্তরাষ্ট্রে স্থায়ীভাবে বসবাসের প্লট করতে সাহায্য করার অঙ্গিকার করলেও পরবর্তীতে তারা আর বিপথ থেকে ফিরতে পারেনা। কারণ, বেশিরভাগক্ষেত্রে পার্লারে অনৈতিক কাজের সময় ভিডিও ধারণ করা হয়। শেষ পর্যন্ত তাই প্রতারকের ফাঁদের বাইরে আসা সম্ভব হয়না।
অভিযোগ আছে, সহজ সরল নারীরা সামান্য কিছু অর্থের লোভে সংসার ত্যাগ করে অন্ধকারের চোরাগলিতে পা বাড়ায়। আর দিনকে দিন এই সংখ্যা বেড়েই চলেছে। এ অবস্থায় কম্যুনিটির মধ্যে নিরব হতাশা থাকলেও মুখ খুলছেন না কেউই।
উল্লেখ্য, এর আগেও জ্যাকসন হাইটস, জ্যামাইকা, এলমহার্স্ট, ফ্লাশিংসহ বিভিন্ন স্থানের বেশ কয়েকটি বিউটি পার্লার/ম্যাসেজ পার্লার/স্পা-তে অভিযান চালায় নিউইয়র্ক পুলিশ। সে সময়ও অন্যান্যের সাথে আটক হয়েছিলো ৬ বাংলাদেশি। বর্তমানে অনৈতিক কাজে যুক্ত থাকার অভিযোগে কোন কোন পার্লারে পুলিশ তালাও ঝুলিয়ে দিয়েছে।
No comments:
Post a Comment