Social Icons

Saturday, October 7, 2017

ঘুমের অভাবে মস্তিষ্ক নিজেই নিজেকে খেয়ে ফেলে!

সাম্প্রতিক এক গবেষণা থেকে ধারণা করা হচ্ছে, ঘুমের অভাব খুব বেশি হলে মস্তিষ্ক নিজেই নিজেকে খেয়ে ফেলে। এর অর্থ হলো, মস্তিষ্কের কোষগুলোর বর্জ্য ধ্বংস করে যেসব কোষ, তারা অতিরিক্ত সক্রিয় হয়ে পড়ে।
মস্তিষ্ককে সক্রিয় রাখার জন্য ঘুমের কোনো বিকল্প নেই- এটা আমরা জানি। আমরা যখন ঘুমিয়ে থাকি তখন সারা দিনে জমা হওয়া ক্ষতিকর পদার্থগুলো পরিষ্কার হয়। এতে ঘুম থেকে ওঠার পর মস্তিষ্ক আবার ঠিকভাবে কাজ করতে পারে।
মস্তিষ্ককে পরিষ্কার রাখার এই কাজের একটি অংশ হলো মাইক্রোগ্লিয়া কোষগুচ্ছ, যারা স্নায়ুতন্ত্রের বর্জ্য, ক্লান্ত এবং মৃত কোষের বর্জ্য পরিষ্কার করে। আরও এক ধরণের কোষ, অ্যাস্ট্রোসাইট মস্তিষ্কের বেশ কিছু কাজ একসাথে করে। এদের অনেকেগুলো কাজের মাঝে একটি হলো মস্তিষ্কের অপ্রয়োজনীয় সিন্যাপ্সগুলোকে ছেঁটে ফেলা।
নিউরোসায়েন্স জার্নালে প্রকাশিত এই গবেষণায় পরীক্ষা নিরীক্ষা করা হয় চার দল ইঁদুরের ওপর। প্রথম দলকে ইচ্ছেমত ঘুমাতে দেওয়া হয়। দ্বিতীয় দলকে সময়মত ঘুম থেকে ওঠানো হয়। তৃতীয় দলকে অতিরিক্ত আট ঘন্টা জাগিয়ে রাখা হয়। আর চতুর্থ দলকে জাগিয়ে রাখা হয় টানা পাঁচ দিন।
আরাম করে ঘুমানো ইঁদুরের মস্তিষ্কে অ্যাস্ট্রোসাইট সক্রিয় ছিল ৬ শতাংশ সিন্যাপ্সে। আট ঘন্টা ঘুমানো ইঁদুরে ৮ শতাংশ সিন্যাপ্সে সক্রিয় ছিল অ্যাস্ট্রোসাইট। আর ৫ দিন না ঘুমানো ইঁদুরে ১৩.৫ শতাংশ সিন্যাপ্সে অ্যাস্ট্রোসাইট সক্রিয় ছিল। তার অর্থ হলো ঘুমের অভাবে বেশি সক্রিয় হয়ে ওঠে অ্যাস্ট্রোসাইট কোষগুলো।
“ঘুমের অভাব হলে সিন্যাপ্সের কিছু অংশ খেয়ে ফেলে অ্যাস্ট্রোসাইট, এটা আমরা প্রথমবারের মত দেখাতে পেরেছি,” বলেন এই গবেষণার নিউরোসায়েন্টিস্ট মাইকেল বেলেসি। তবে ঘুমের প্রচন্ড অভাবের সময়ে এই প্রক্রিয়াটি উপকারী নাকি অপকারী সেটা তারা নিশ্চিত করে বলেননি।
তবে যে ব্যাপারটি বেশি দুশ্চিন্তার উদ্রেক করে তা হলো মাইক্রোগ্লিয়ার কার্যক্রম। তারা অতিরিক্ত ঘুমের অভাবের ফলে সক্রিয় হয়। আর এর সক্রিয়তা থেকে দেখা দিতে পারে আলঝেইমার্স এবং মস্তিষ্কের ক্ষমতা ক্ষয় হওয়ার অন্যান্য রোগগুলো।
গবেষকেরা লেখেন- “অতিরিক্ত ঘুমের অভাব মাইক্রোগ্লিয়া কোষকে সক্রিয় করে এবং তাদের ফ্যাগোসাইটিক (কোষের বর্জ্য খেয়ে ফেলা) কাজে অনুপ্রেরণা দেয়, নিউরোইনফ্লামেশনের কোনো বড় লক্ষণ ছাড়াই। এ থেকে বোঝা যায় বড় সময়ের জন্য ঘুমের অভাব মাইক্রোগ্লিয়াকে প্রভাবিত করে এবং অন্যান্য সমস্যার ব্যাপারে মস্তিষ্ককে সংবেদনশীল করে তোলে।”
সবচাইতে জটিল অঙ্গ, মস্তিষ্ক প্রতিনিয়তই নতুন করে নিজেকে তৈরি করছে, শক্তিশালী হচ্ছে আর ভাঙ্গাগড়ার ভেতর দিয়ে যাচ্ছে। এটা একটি অসীম প্রক্রিয়া, যেখানে কিছু কাঠামো ভাঙ্গে আর কিছু নতুন করে তৈরি হয়। এ নিয়ে আরো গবেষণা হলে বোঝা যাবে এই অ্যাস্ট্রোসাইট এবং মাইক্রোগ্লিয়ার সক্রিয়তা মস্তিষ্কের ওপর আসলে কী প্রভাব রাখে। তবে তা না জানা পর্যন্ত যথেষ্ট ঘুমানোটাই নিরাপদ।

No comments:

Post a Comment

 

© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত । এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি

সম্পাদকীয় কার্যলয়

Rua padre germano mayar, cristo rio -80040-170 Curitiba, Brazil. Contact: +55 41 30583822 email: worldnewsbbr@gmail.com Website: http://worldnewsbbr.blogspot.com.br

সম্পাদক ও প্রকাশক

Jahangir Alom
Email- worldnewsbb2@gmail.com
worldnewsbbbrazil@gmail.com
 
Blogger Templates