গত ১৭ আগস্ট স্পেনের বার্সেলোনায় ঘটে যাওয়া সন্ত্রাসী হামলার পর থেকে সামাজিক ও অর্থনৈতিক ভাবে নেতিবাচক প্রভাব দেখা যাচ্ছে প্রবাসী বাংলাদেশীদের ওপর। কাতালুনিয়া অঙ্গরাজ্যের রাজধানী বার্সেলোনার রামলায় সন্ত্রাসী হামলাটি ঘটেছে। এ স্থানটি বাংলাদেশি অধ্যুষিত এলাকা। এর আশেপাশে অন্তত ৫ হাজার বাংলাদেশী বসবাস করে। এখানে তাদের নিজস্ব আবাসস্থল ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান আছে। আক্রান্ত এলাকার আশেপাশে আছে প্রায় শতাধিক বাংলাদেশী ব্যবসা প্রতিষ্ঠান।
ঘটনার দিন বিকেল ৫টা ৫ মিনিটে পথচারীদের উপর গাড়ি উঠিয়ে দিয়ে সন্ত্রাসী হামলা ঘটানোর পরপরই আশেপাশে সকল ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দিতে হয়। সাথে বাংলাদেশিদের সকল ব্যবসা প্রতিষ্ঠানও বন্ধ হয়ে যায়। হামলার পরের দিন ১৮ আগস্ট দোকানপাট খোলা হলেও ব্যবসা বানিজ্যে স্বাভাবিকতা ফিরে আসেনি। এ ব্যপারে একাধিক বাংলাদেশি ব্যবসায়ীর সাথে যোগাযোগ করা হলে তারা ব্যবসায় আশঙ্কাজনক নেতিবাচক প্রভাবের কথা জানিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। অনেক বাংলাদেশি এর মধ্যেই তাদের ব্যবসা অর্ধেকে নেমে এসেছে বলে উৎকণ্ঠা প্রকাশ করেছেন।
উল্লেখ্য, আগস্ট মাস ছুটির মাস বলে এই সময়টাতে বার্সেলোনার মূল শহরে পর্যটকের ভিড় সবচেয়ে বেশি থাকে। প্রবাসী বাংলাদেশিরা পর্যটকদের চাহিদার সাথে সঙ্গতি রেখে তাদের হোটেল, রেস্টুরেন্ট, ডিপার্টমেন্টাল স্টোর, কাপড়ের দোকান, মনোহরি দোকানগুলো সাজান। আশঙ্কা করা হচ্ছে, এই হামলার কারনে বার্সেলোনা পর্যটকশূন্য হলে তার মারাত্মক নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশী ব্যবসায়ীদের ওপর।
অন্যদিকে সন্ত্রাসী হামলার পর দেশটির আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মধ্যে সর্বোচ্চ তৎপরতা দেখা যাচ্ছে। পুলিশর চিরুনী অভিযানে সবচেয়ে বেশী সঙ্কটে পড়েছে অবৈধ অভিবাসীরা। কাতালুনিয়া অঙ্গরাজ্যে বাংলাদেশি প্রায় দুই হাজার অবৈধ অভিবাসী পুলিশের তল্লাশির হাত থেকে নিজেদের বাঁচানোর জন্যে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। বার্সেলোনা শহরে অবৈধ বাংলাদেশী অভিবাসীদের অনেকের সাথেই যোগাযোগ করলে তারা ফোনে জানিয়েছেন যে, তারা তাদের আবাসস্থল ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। বার্সেলোনায় বসবাসকারী এক বাংলাদেশি জানায়, তার বাসায় দুইজন অবৈধ বাংলাদেশি অভিবাসী ভাড়া থাকতো, কিন্তু সন্ত্রাসী হামলার পর দুই দিন অতিবাহিত হবার পরও গ্রেফতার আতঙ্কে তারা বাসায় ফিরে আসছে না।
উল্লেখ্য, স্পেনের অভিবাসন আইন অনুযায়ী অবৈধ অভিবাসীরা নিজ দেশের পাসপোর্টের মাধ্যমে কারো বাসায় বসবাস করছে এমন ডকুমেন্ট যাকে স্প্যানিশ ভাষার “এমপাদরোনামেন্ত” বলে –এটা দেখিয়ে বসবাস করতে পারে। কিন্তু সন্ত্রাসী হামলার পর শহরে জরুরী অবস্থা চলার কারণে অবৈধ অভিবাসীদের ওপর পুলিশ কঠোর হবে এমন আতঙ্কে পালিয়ে গা বাঁচানোর চেষ্টা করছে অবৈধ প্রবাসী বাংলাদেশিরা।


No comments:
Post a Comment