Social Icons

Monday, August 14, 2017

বিদেশে রাজনৈতিক আশ্রয়ে বাড়ছে বাংলাদেশিদের সংখ্যা


আশা কিংবা জীবিকার তাগিদে মানুষ পাড়ি জমাচ্ছে বিদেশে। অনেকের জন্য আবার বিদেশ যাত্রাটি শুধুমাত্র জীবন বাঁচার উপায়। তাই নির্যাতন আর নিপড়নের থেকে বাঁচার মানবিক যুক্তি দিয়ে ভিন দেশ রাজনৈতিক আশ্রয় বা অ্যাসাইলাম নেন সংঘাত কবলিত দেশের মানুষগুলো। তবে দৃশ্যমান যুদ্ধ সংঘাত না থাকলেও প্রতিবছরই বাড়ছে বাংলাদেশিদের রাজনৈতিক আশ্রয়ে বিদেশে পাড়ি দেওয়ার সংখ্যা। ইরাক, সিরিয়া বা সোমালিয়া দেশগুলোর মতো রাজনৈতিক আশ্রয় প্রার্থীর তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান উপরের দিকে।বৈধ বা অবৈধ যেভাবেই হোক বিদেশে গিয়ে মানবিক আশ্রয়ের প্রার্থনা করছে এসব বাংলাদেশিরা। জাতিসংঘের শরনার্থী সংস্থার হিসেবে গত ৫ বছরে বিভিন্ন রাজনৈতিক আশ্রয়ের প্রার্থনা করেছে প্রায় দেড় লাখ প্রবাসী বাংলাদেশি। আর তাই বিদেশে আশ্রয়ের জন্য বাংলাদেশিরা নিজের দেশ সর্ম্পকে নানা নেতিবাচক নালিশ করছে। এতে সুনাম ক্ষুন্ন হচ্ছে বাংলাদেশের।
দক্ষিণ আফ্রিকার প্রবাসী আনিসুল ইসলাম বলেন, দক্ষিণ আফ্রিকায় বৈধ উপায়ে বাংলাদেশ থেকে আসা সম্ভব নয়। যার কারণে প্রচুর বাংলাদেশি অবৈধভাবে প্রবেশ করছে দক্ষিণ আফ্রিকায়। কিন্তু সেইদেশে গিয়ে বৈধভাবে কাজ করার উদ্দেশ্য বেশিরভাগ প্রবাসী রাজনৈতিক আশ্রয়ের জন্য আবেদন করেন। আনিসুল ইসলাম বলেন, অনেক সহজেই বাংলাদেশিরা রাজনৈতিক আশ্রয় পেয়ে যাচ্ছে দক্ষিণ আফ্রিকায়। আর এই রাজনৈতিক আশ্রয়ের মাধ্যেমেই বছরের পর বছরে অবৈধ ভাবে বসবাস করছে অনেক প্রবাসী বাংলাদেশি।
রাজনৈতিক আশ্রয়ে বাংলাদেশ থেকে বিদেশে যাওয়া নিয়ে জাতিসংঘের একটি প্রতিবেদনে জানা যায়, গত ৫ বছরে বিভিন্ন দেশে রাজনৈতিক আশ্রয়ে আবেদন করেছেন ১ লাখ ৩৭ হাজার বাংলাদেশি। অথাৎ প্রতিদিন রাজনৈতিক আশ্রয়ের প্রার্থনা করছেন ৭৬ বাংলাদেশি।

প্রতিবেদনে আরও জানা যায়, দেশের বিরুদ্ধে নালিশ জানিয়ে গেল বছর ২০১৬ সালে রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন করেন ২৮ হাজার ৩শত ৯৫ নাগরিক। ফ্রান্সে রাজনৈতিক আশ্রয়ে প্রার্থী ওবাইদুল করিম বলেন, মিথ্যা মামলায় বাংলাদেশে বসবাস করতে পারছিলো না সে ও তার কয়েকজন বন্ধু। নিজেদের জীবন বাঁচাতে বাংলাদেশিরা বৈধ নয় অবৈধভাবে সমুদ্র পাহড়, কিংবা জঙ্গলের মাধ্যমে বিভিন্ন দেশে পাড়ি দিচ্ছে বলেও জানান তিনি।
ওবাইদুলের এক বন্ধু বলেন, কোনো উপায় না পেয়ে এবং আর্থিক সুবিধার পাওয়া যাবে এমন আশায় বাংলাদেশিরা বিভিন্ন ধরণের দালালের মাধ্যমে বিদেশে আসছে। তিনি বলেন, এভাবে অবৈধ ভাবে বিদেশে গিয়ে রাজনৈতিক আশ্রেয়ের আবেদন করলে অনেক বাংলাদেশি আশ্রয় পেয়ে যায়। এ প্রক্রিয়ায় সহজেই বিদেশের অনেক দেশে বসবাসের সুবিধা পাওয়া যায়। এমনকি রাজনৈতিক আশ্রয়ে থাকলে অনেক দেশে পুলিশি জামেলা থেকে রেহায় পাওয়া যায়। যার কারণে সহজ উপায়ে দিন দিন রাজনৈতিক আশ্রয় বৃদ্ধি পাচ্ছে। মানবিক বিবেচনায় রাজনৈতিক আশ্রয়ের জন্য বাংলাদেশিদের প্রথম পছন্দ ইউরোপের দেশগুলো। গেল বছর ৩২ হাজার ৭শত বাংলাদেশি রাজনৈতিক আশ্রয়ের প্রাথর্না করেছে ফ্রান্সে। যা সেই বছরের সবোর্চ্চ। তবে গেল তিন বছরে হঠাৎ করেই বাংলাদেশিদের রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন বেড়েছে ইতালিতে।
এউএনএসসিআর পরিসংখ্যান অনুসারে রাজনৈতিক আশ্রয়ের জন্য বাংলাদেশের দ্বিতীয় পছন্দের দেশ দক্ষিণ আফ্রিকা। দেশটিতে গত পাঁচ বছরে রাজনৈতিক আশ্রয়ের আদেন করেছে ২৬ হাজারের বেশি বাংলাদেশি। এছাড়াও বহুদিন ধরেই বিভিন্ন দেশের বিপদগামী মানুষদের রাজনৈতিক আশ্রয় দিয়ে আসছে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য। এই দুইদেশেই বাংলাদেশি রাজনৈতিক আশ্রয় প্রার্থির সংখ্যা বেড়েছে উল্লেখযোগ্য হারে। তবে বাংলাদেশে রাজনৈতিক সমস্যা নেই এমন যুক্তি দিয়ে বেশির ভাগা আবেদনই বাদ দেওয়া হচ্ছে বলেও জানা যায়।
বিদেশি গিয়ে সহজে বৈধ প্রবাসীদের মতো নিজেদের জায়গা তৈরি করার জন্য অবৈধ প্রবাসীরা মিথ্যা রাজনৈতিক আশ্রয়ের ভিত্তি তৈরি করেছে তা দেশের জন্য কখনোই কাম্য নয়। তাই মিথ্যা রাজনৈতিক আশ্রয়ে যাওয়া প্রবাসীদের চিহ্নিত করে সরকারের দ্রুত দেশে ফেরত নিয়ে আসতে হবে বলে মনে করেন অনেক প্রবাসী বাংলাদেশিরা। শুধু দেশে ফেরতই নয় তাদের উপযুক্ত শাস্তির ব্যবস্থা করার প্রতিও জোর দিয়েছে অনেক প্রবাসী বাংলাদেশিরা।

No comments:

Post a Comment

 

© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত । এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি

সম্পাদকীয় কার্যলয়

Rua padre germano mayar, cristo rio -80040-170 Curitiba, Brazil. Contact: +55 41 30583822 email: worldnewsbbr@gmail.com Website: http://worldnewsbbr.blogspot.com.br

সম্পাদক ও প্রকাশক

Jahangir Alom
Email- worldnewsbb2@gmail.com
worldnewsbbbrazil@gmail.com
 
Blogger Templates